বাবার স্নেহের ছোঁয়া পেতে আদালতে ৪ বছরের শিশু


বিশেষ প্রতিবেদক:

বুধবার বেলা ১১টা, রাজশাহীর আদালত চত্বর। দু’জন আসামিকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এক পুলিশ সদস্য। আদালত চত্বরে হররোজই এমন দৃশ্যের দেখা মেলে। তবে এই দৃশ্যে বাড়তি মাত্রা আনলো হঠাৎ পেছন দিক থেকে দৌঁড়ে আসা চার বছর বয়সী এক নিষ্পাপ শিশু।

দৌঁড়ে আসার সময়ই চোখে-মুখে হারানো কিছু ফিরে পাওয়ার উচ্ছ্বাস। দুই হাত দিয়ে হাতকড়া পরা দুই ব্যক্তির একজনের হাত আঁকড়ে ধরলেন শিশুটি। আচমকা হাত ধরায় শিশুটির দিকে তাকালেন হাতকড়া পরা ব্যক্তি। এরপর মুখে কারও কোনো কথা নেই। তবে দু’জনের চোখের চাহনিতে প্রিয় মানুষকে এক-দণ্ড কাছে পাওয়ার আবেগ স্পষ্ট!

জানা গেল, সম্পর্কে তারা বাবা-মেয়ে। ওই ব্যক্তি একটি মামলায় কিছুদিন আগে গ্রেফতার হয়েছেন। জেলহাজত থেকে মঙ্গলবার (০৮ মে) হাজিরা দিতে আদালতে এসেছিলেন।

আদালতের মূল ভবন থেকে বেরিয়ে মুহুরী ভবনের গলি হয়ে গাড়িতে উঠবেন। সেই ফাঁকে বাবার আদর পেতে পিছু পিছু ছুটে চলেছে অবুঝ শিশুটি।

মাঝে কয়েক দফা বাবার কোলে চড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় সে। পেছন দিক থেকে হাঁটার গতি বাড়াতে বারবার তাড়া করছে পুলিশ সদস্য। ফলে দ্রুত হাঁটছে বাবা।

ছোট্ট শিশুটির হাত থেকে তাই বারবার ফঁসকে যাচ্ছে বাবার স্নেহের হাত। আদালতের ১নং মুহুরী বার ভবনের গলি পেরিয়ে ফটকে পৌঁছানো পর্যন্ত দেখা গেল এমন আবেগময় দৃশ্য।

এগিয়ে গিয়ে ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় ও মামলা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলেও কথা বলার অনুমতি দেননি দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য। ফলে জানা গেলো না কিছুই। শুধু স্মৃতিপটে রয়ে গেল- আবেগঘন কিছু মূহুর্তের দৃশ্য!

হররোজ এমন হাজারো দৃশ্যের দেখা মেলে আদালত চত্বরে। হয়তো অপরাধ করে বিচার প্রক্রিয়ার ‍মুখোমুখি হতে বেশিরভাগ মানুষ আসে এখানে। তবে বিনা দোষে কিংবা কারও ষড়যন্ত্রে হয়রানির শিকার হয়ে আদালত চত্বরে আসতে হয় না, এমনটাও নয়!


শর্টলিংকঃ