বিদিশার প্রার্থনায় সুস্থ এরশাদ!


ইউএন ডেস্ক নিউজ:
এরশাদ ও বিদিশা।
সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ  (৮৮) গুরুতর অসুস্থ। তিনি এতোটাই অসুস্থ যে, তার মৃত্যুর গুজবও ছড়িয়ে পড়েছিল। সাবেক প্রেসিডেন্টের যখন এই অবস্থা, তখন তাকে দেখতেও যাননি স্ত্রী রওশন এরশাদ। তবে সাবেক স্বামীর ভয়াবহ অসুস্থতায় নীরব থাকেননি বিদিশা। এরশাদের দীর্ঘজীবন কামনা করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন। বিদিশা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরশাদের সুস্থতা কামনা করেন স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। তারপরই খবর এসেছে সুস্থতা বোধ করছেন এরশাদ!
বিদিশার ফেসবুক স্টাটাসটি ইউনিভার্সাল২৪নিউজের পাঠকদের জন্য এখানে হুবুহু তুলে ধরা হলো: ‘উনাকে (এরশাদ) আরও কিছুদিন বাঁচতে দিন। এফবিতে (ফেসবুকে) দেখেছি উনাকে মেরে ফেলেছেন। বিশ্বাস করুন, উনি আরও কিছুদিন বাঁচতে চান আমাদের ছেলে এরিকের জন্য। উনি পৃথিবীতে এরিক ছাড়া বোধহয় আর কাউকে এতো ভালোবাসেননি। আমিও সব মাতৃত্বের লড়াই করার পরও ছেলেকে বাবা থেকে আলাদা করতে পারিনি।’
‘সব থেকে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছি আমি আমার সন্তানকে কাছে না রেখে, চোখে না দেখে। তারপরও আমাকে পরম আনন্দ দেয় বাবা ছেলের (এরশাদ-এরিক) খুনসুটি দেখে। কোনো শর্তের বন্ধন নেই। বাবা-ছেলের বয়সের পার্থক্যের পরও তাদের মধ্যে আড্ডা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক চোখে পড়ার মতো। ছেলেকে স্কুলে দিয়ে ও নিয়ে আসে একজন বৃদ্ধ পিতা। ছুটির দিনে বাবা ছেলের একসঙ্গে ভ্রমণ।’
‘রাতে এরিক ছাড়া উনি (এরশাদ) ঘুমাতে পারেন না একদম। তাই তো গত সপ্তাহে আমি যখন সিএমএইচে গেলাম দেখতে (এরশাদকে), দেখি নাস্তা করেন নাই, অপেক্ষায় আছেন এরিকের। দুপুরে এরিক স্কুল থেকে ফিরলে লাঞ্চ করবেন বললেন। আমাকে সরি বললেন, অনেক অন্যায় হয়ে গেছে আমার সঙ্গে যা সংশোধন করার উপায় নেই। তা অন্য প্রসঙ্গ। অনেক স্মৃতিচারণ করলেন তিনি।’
‘এরশাদ ‘বলেই ফেললেন, রাত জেগে এরিক নাকি বকবক করে, যা নাকি আমি করতাম এককালে। উনি চোখ বন্ধ করলে এরিক নাকি চোখ খুলে দেয়, বলে আচ্ছা ড্যাডি এইবার তাহলে একটা রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনাই। কিন্তু তুমি তো ঘুমাবে না আমার আগে। গান করতে করতে এরিক নিজেই ঘুমিয়ে পড়ে। আমিও নাকি একই কাজ করতাম অনেক বছর আগে। সেদিন উনার চোখে পানি ছিল। জীবন মৃত্যুর এই শেষ সময়ে উনার (এরশাদ) উপলব্ধিগুলো নিশ্চয়ই মিথ্যা না।’
‘চল্লিশ মিনিট আমার হাত উনার দুই হাত দিয়ে ধরে বসেছিলেন। চোখ দিয়ে ঝরছিল পানি আমাদের দু’জনেরই। আমাদের দুইজনের মধ্যে সময়ের গ্যাপটা অনেক বেশি হয়ে গেছে এতদিনে, তাই উনার (এরশাদ) জীবনে শেষ সময়ে আমি কোনো সেবা করতে পারলাম না। উনি বললেন, আমি নাকি বেশি সোজাসাপ্টা, সাধাসিধা ছিলাম। লম্বা হয়েছি, বুদ্ধি হয়নি আমার। আমি আরো খুশি আছি অল্প বুদ্ধিতে সোজাসাপ্টা সিম্পল জীবনে। রাজনীতি, প্যাঁচ ষড়যন্ত্র টেনশন নিয়ে ঘুমাতে হয় না আমার। সততার সাথে স্বল্প পরিশ্রম আমার ফাউন্ডেশনটা চালাই তাতেই আমার শান্তি।’
‘দিনের শেষে রাতে এরিকের কথা মনে হলে মায়াকে বুকে চেপে ঘুমাই আমি। উনিও মায়াকে ভালোবাসেন। বললেন, তোমার মতো মা থাকলে বাবা দরকার নেই। আমি শুধুই বললাম, ‘উই্স আওয়ার মেরিজ ওয়াজ নট সো ক্রাউডেড’। উনি আমার গালে আলতো করে কাঁপা কাঁপা হাতে স্পর্শ করে বললেন, ‘সরি’। এরিক আছে, মায়া আছে তোমার পাশে। আমার মনে হয়েছে উনি আরও কিছুদিন বাঁচতে চান উনার এরিকের জন্য শুধু। আমিও চাই আরও কিছুদিন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, আনন্দ উনি এরিকের কাছ থেকে নিয়ে যাক। যেটা একমাত্র এরিকই দিতে পারবে উনাকে, কারণ এরিক তো স্পেশাল চাইল্ড।’#
সূত্র: ফেসবুক।

শর্টলিংকঃ