Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

বিদেশি ৩০ কূটনীতিক করোনা ভ্যাকসিন নিলেন ঢাকায়


ইউএনভি ডেস্ক:

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), ফ্রান্স, ভারত, তুরস্ক, ভ্যাটিকান সিটি, ইতালি, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩০ জন বিদেশি কূটনীতিক ভ্যাকসিন নিয়েছে।

 

ঢাকায় কর্মরত প্রায় ১২০০ কূটনীতিককে সরকারি উদ্যোগে পর্যায়ক্রমে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের ভ্যাকসিন প্রয়োগের উদ্বোধনী দিনেই ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা। এদিন তাদের সঙ্গে ভ্যাকসিন নিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমও।

ভ্যাকসিন নেওয়া শেষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আত্মবিশ্বাসী বোধ করছি। এখানে সুন্দরভাবে বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য টিকা প্রয়োগ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানাই।

আমাদের দেশে যতগুলো বিদেশি মিশন আছে, তাদের সব কূটনীতিকদের জন্য আমরা ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির আয়োজন করেছি। আজ (বুধবার) বিদেশি মিশনের কমবেশি ৩০ জন কূটনীতিককে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিদেশি মিশনগুলোর প্রায় ১২০০ কূটনীতিককে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। বাংলাদেশে যত কূটনীতিক আছেন, তারা সবাই ভ্যাকসিন নেবেন।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কূটনীতিকদের বাইরেও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে যারা কর্মরত আছেন, তাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের কাছে তালিকা চাওয়া হয়েছে। কূটনীতিকদের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারাও গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন নেবেন।’

সামনের দিনে গ্যাভি (ভ্যাকসিনের বৈশ্বিক জোট) থেকে বাংলাদেশ আরও ভ্যাকসিন পাবে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশই এখন পর্যন্ত আমাদের মতো বিস্তৃত পরিসরে ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করতে পারেনি। গতকালের (মঙ্গলবার, ৯ ফেব্রুয়ারি) হিসাব অনুযায়ী প্রায় এক লাখ মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছে। আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ভ্যাকসিন সংক্রান্ত কূটনীতি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব অব্যাহত থাকবে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কিভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়, আমরা সেভাবেই কাজ করছি। ভ্যাকসিন সংক্রান্ত বৈশ্বিক জোট গ্যাভি থেকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী এর আগে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। বাংলাদেশ এই সংগঠনের খুব সক্রিয় সদস্য, এখান থেকে সামনের দিনে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভ্যাকসিন আমরা পাব।’

ভ্যাকসিন নেওয়া শেষে ডিপ্লোম্যাটিক কোরের প্রধান এবং ঢাকায় নিযুক্ত ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত আর্যবিশপ জর্জ কোরচারি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় কূটনীতিকদের জন্য ভ্যাকসিন কর্মসূচি আয়োজের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ। কোভিড বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আক্রমণ চালাচ্ছে। তাই এই আয়োজনকে আমি সাধুবাদ জানাই। কূটনীতিক ছাড়াও এই দেশের মানুষের জন্য সরকার ভ্যাকসিন কর্মসূচি চালু করেছে, লোকজন ভ্যাকসিন নিয়ে সুরক্ষিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। করোনা মোকাবিলায় এটি চমৎকার একটি উদ্যোগ। সরকারের উদ্যোগ বাস্তবায়নে সবার এগিয়ে আসা উচিত।’

ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত রেনজে তেরিংক বলেন, ‘এই ভ্যাকসিন মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে সহায়তা করবে।’

ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যে সুসম্পর্ক বিরাজ করছে, এটা তারই প্রমাণ। টেকসই উন্নয়নের জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ-ভারত— আমরা দুই দেশ একসঙ্গে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে আমরা একসঙ্গে ভ্যাকসিন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে চাই। করোনা সংক্রমণের বিরুদ্ধে আমরা একসঙ্গে লড়াই করতে চাই। এজন্যই ভারত উপহার হিসেবে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন পাঠিয়েছে।’

ভারতীয় হাইকমিশনার আরও বলেন, ‘বাংলাদেশি বন্ধুদের উদ্দেশে বলব— বাংলাদেশ সরকার করোনা সংক্রমণ থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম করছে। এ কারণে গত তিন দিন আগে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি চালু করেছে। এই কর্মসূচি সফল করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’


Exit mobile version