বিদ্যা ও সুরের দেবী সরস্বতী পূজা আজ


নিজস্ব প্রতিবেদক :

হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা আজ রবিবার। বাণী অর্চনা ও নানা আয়োজন দিয়ে বিদ্যা, বাণী ও সুরের দেবী সরস্বতীর পূজা শুরু হয়েছে। ধর্মীয় বিধান অনুসারে সাদা রাজহাঁসে চড়ে বিদ্যা ও সুরের দেবী সরস্বতী পৃথিবীতে আসেন।

      ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে উদযাপিত হচ্ছে সরস্বতী পূজা

ধর্মীয় আচার-আচরণে ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে রাজশাহীসহ সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে সরস্বতী পূজা। বিদ্যা, বুদ্ধি, জ্ঞান অর্জন ও শাস্ত্রীয় চর্চায় সমৃদ্ধি লাভের প্রত্যাশায় দেবীর অর্চনায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মন্ডপগুলোতে আয়োজন করা হয়েছে এ পূজা। রোববার সকাল থেকে শিক্ষার্থী ও ভক্তরা ভীড় করে মন্ডপগুলোতে।

সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমল লোচনে/বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোহস্তুতে’-মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমীর পুণ্য তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এ মন্ত্র উচ্চারণ করে বিদ্যার দেবী সরস্বতীকে আরাধনা করছেন।

সরস্বতী মূলত বৈদিক দেবী। বেদে সরস্বতী প্রধানত নদীর অধিষ্ঠাত্রী দেবী। সরস শব্দের অর্থ জল। অতএব সরস্বতী শব্দের আদি অর্থ হলো জলবতী অর্থাৎ নদী। সরস্বতী শব্দটির বুৎপত্তিগত অর্থে সরস+বতু আর স্ত্রী লিঙ্গে ‘ঈ’ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে সরস্বতী। তিনি বিদ্যাদেবী, জ্ঞানদায়িনী, বীণাপাণি, কুলপ্রিয়া, পলাশপ্রিয়া প্রভৃতি নামে অভিহিতা। তাঁর এক হাতে বীণা অন্য হাতে পুস্তক।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী কলেজের হিন্দু হোস্টেল প্রাঙ্গন, ভোলানাথ স্কুল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রাবাসে এ পূজার আয়োজন করা হয়। পূজা অর্চণা শেষে দেবী কাছে পুষ্পাঞ্জলী প্রদান করে ভক্তরা। এছাড়াও নগরীর বিভিন্ন মন্দিরেও এ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ পূজা।

হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম এই ধর্মীয় উৎসবে পঞ্চমী তিথিতে বিদ্যা ও জ্ঞানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সরস্বতীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করবেন অগণিত ভক্ত। সনাতন ধর্মালম্বীদের মতে দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী।

এদিকে, সরস্বতী পূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা বাণী অর্চনাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। রাজধানী ঢাকা ও রাজশাহীসহ সারাদেশের মন্দির ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পূজা ছাড়াও অন্য অনুষ্ঠানমালায় আছে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান, প্রসাদ বিতরণ, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সন্ধ্যা আরতি, আলোকসজ্জা প্রভৃতি।

সরস্বতী পূজা উপলক্ষে  রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

     বিদ্যার দেবী স্বরস্বতী

প্রধানমন্ত্রী এ উপলক্ষে এক বাণীতে বলেন, বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আবহমানকাল ধরে এ দেশের সব মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে আসছেন।

প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ হলে সাড়ম্বরে বিদ্যা ও আরাধনার দেবী সরস্বতীর পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সকাল ৮ টায় শুরু হয়  পূজার্চনা এবং ১০ টা থেকে শুরু হয়েছে অঞ্জলি প্রদান। সন্ধ্যা ৬টায়  আরতি অনুষ্ঠান।

এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট জগন্নাথ হল চত্বর জুড়ে বিভিন্ন আইডিয়া ও থিমভিত্তিক ৭০টির বেশি মণ্ডপ নির্মাণ করেছে। জগন্নাথ হল উপাসনালয়ে হল প্রশাসনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয়ভাবে আয়োজিত একটি পূজা ছাড়াও এই মহোৎসবের বিশেষ আকর্ষণ থাকবে হলপুকুরে চারুকলা অনুষদের তৈরি ৪৫ ফুট দীর্ঘ বিশাল অবয়বের একটি প্রতিমা।


শর্টলিংকঃ