‘বিনা চিকিৎসায় রোগী মরলে দায় নিতে হবে চিকিৎসকদের’


নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের দাবিসহ রাজশাহী-ঢাকা, রাজশাহী-চট্টগ্রাম সরাসারি ট্রেন সার্ভিস চালুর দাবিতে মানববন্ধন ও সামবেশ হয়েছে। রোববার সকালে মহানগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে এই কর্মসূচির আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ।

                                                                  রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের মানববন্ধন

মানববন্ধনে বক্তারা রামেক হাসাপাতালের বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে অবিলম্বে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতের দাবি জানান। একইসঙ্গে রোগী ও তাদের স্বজনদের প্রতি চিকিৎসকদের দুব্যর্বহার বন্ধ, ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধসহ সকল অব্যবস্থাপনা দূর করে রোগীবান্ধব হাসপাতাল গড়ে তোলার দাবি জানান তারা। রামেক হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বক্তারা বলেন, ‘হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় কোনো রোগী মারা গেলে তার দায় নিতে হবে’। এ জন্য চিকিৎসকদের মানবিক হয়ে চিকিৎসা সেবায় মনযোগী হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা। চিকিৎসকদের দুর্নীতি ও অবহেলার বিরুদ্ধে দুদকের দৃষ্টি আহ্বান করে বক্তারা বলেন, তাদের অবৈধ আয়ের উৎস্য খুঁজে বের করতে হবে। এ জন্য আয়কর বিভাগকেও শক্তিশালী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তারা।

রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক জামাত খান। রামেক হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, চিকিৎসকদের কর্তব্যে অবহেলা, রোগীদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত দুর্ব্যবহার ও ভুল চিকিৎসা বন্ধ করতে হবে। দুনীতি, ওষুধ চুরি, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অশুভ আচরণ বন্ধ করতে হবে। পুর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল চালু ও শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে রোগী বান্ধব চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতেরও দাবি জানান তিনি।

মানববন্ধন থেকে রাজশাহীর উন্নয়নে আরো বেশকিছু দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো, রাজশাহী-ঢাকা, রাজশাহী-চট্টগ্রাম সরাসারি ট্রেন সার্ভিস চালু, খাদ্যভান্ডার খ্যাত রাজশাহী অঞ্চলের কৃষি উৎপাদন আরো বৃদ্ধি করে কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে পদক্ষেপ গ্রহণ, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত কৃষি বিশ^বিদ্যালয় বাস্তবায়ন ও প্রস্তাবিত উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন। এসব দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন না হলে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে আগামীতে আরো বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলারও হুশিয়ারি দেওয়া হয় মানববন্ধন থেকে।

অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন সংগ্রাম পরিষদের সাংগাঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামাণিক দেবু, ভাষা সৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি, মুক্তিযোদ্ধা ডা. আবদুল মান্নান, অধ্যাপক জিএম হারুন, প্রবীন সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, অঙ্কুর সেন, নারী নেত্রী কল্পনা রায়, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হক, টিভি জার্নালিষ্ট অ্যাসোসিয়েশেনের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শ্যামল, নারী শিল্পোদ্যোক্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিনা বেগম, রাজশাহী বেনেতি ব্যবসায়ী পরিষদের সহ-সভাপতি মহেষ চন্দ্র, মহিলা নেত্রী রেহেনা আলী খান, শাহিনা বেগম, সাংবাদিক আবু সালেহ মো. ফাত্তাহ, মুক্তিযোদ্ধা মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু, বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার ঘোষ, আদিবাসী নেতা সুভাষ চন্দ্র হেমব্রন, সাংবাদিক হাসান মিল্লাত, মামুন-অর-রশিদ, জুলফিকার আলী, শিশু সংগঠক রজব আলী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসিব পান্না প্রমুখ।


শর্টলিংকঃ