Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

বেকায়দায় রাবি প্রশাসন!


ইউএনভি ডেস্ক:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতি বিষয়ে ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়াসহ কয়েকজনের কাছে কৈফিয়ত তলব করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এম এ বারীকে অব্যাহতি দেয়াসহ সকল প্রকার নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার।


রোববার (১৩ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নীলিমা আফরোজ স্বাক্ষরিত মোট ১১টি চিঠির মধ্যে ভিসিসহ ৮ জনের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।

সাতজনের কাছে কৈফিয়ত তলব:

সাতজনের কাছে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নীতিমালা ২০১৫ এর শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করে ২০১৭ এর পরিবর্তিত নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে ইউজিসি তদন্ত কমিটি। পরিবর্তিত নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে কেনো আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে পত্র-প্রাপ্তির সাত কর্মদিবসের মধ্যে কৈফিয়ত দিতে বলা হয়েছে।

রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মো জাকারিয়া, আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল হান্নান, আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শিবলী ইসলাম, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্সের সহকারী অধ্যাপক গাজী তৌহিদুর রহমান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম মজিবুর রহমান, এবং রেজিস্ট্রার দফতরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার সাখাওয়াত হোসেন টুটুল।

এছাড়া নিয়োগ নীতিমালা পরিবর্তন করে মেয়ে সানজানা সোবহানকে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগ ও এটিএম শাহেদ পারভেজকে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিউিটটে প্রভাষক পদে নিয়োগ দিয়ে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম করা হয়েছে জানিয়ে নিয়োগ কেন বাতিল করা হবে না তার ব্যাখ্যা উপাচার্যকে ৭ দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।

রেজিস্ট্রারকে অব্যাহতি দিতে নির্দেশ:

এদিকে এক চিঠিতে ইউজিসির তদন্ত কমিটিকে বিভিন্ন পর্যায়ে অসহযোগিতা করায় অসদাচরণের শামিল হয়েছে জানিয়ে তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী রেজিস্ট্রারের পদ থেকে অধ্যাপক ড. এম এ বারীকে অব্যাহতি দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়।

বাড়ি দখলে রাখার ক্ষতিপূরণ কোষাগারে জমা দিতে হবে:

উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান ডুপ্লেক্স বাড়ি নিয়ম বহির্ভূতভাবে দখলে রাখায় ৫ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানপূর্বক চালানের কপি জরুরি ভিত্তিতে এ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়।

এর আগে, গত ১০ ডিসেম্বর নীলিমা আফরোজ স্বাক্ষরিত আরেকটি চিঠিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার নিয়োগ স্থগিত রাখতে নির্দেশনা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এসব নির্দেশনা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সুলতান উল ইসলাম বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটু দেরিতে হলেও নির্দেশনা দিয়েছে আমরা খুশি। আর বলতে চাই, এই নির্দেশনা প্রমাণ করে তিনি একটি ঘৃণিত ও গর্হিত কাজ করেছেন। যা একটি উদাহরণ হয়ে গেল যে কিভাবে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা তিনি করেছেন। উপাচার্য পদে থাকার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছেন। তার পদত্যাগ করা উচিত বলে আমরা মনে করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ বলেন, উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নির্দেশনা আসাটা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি কলঙ্ক লেপন করেছে। বড় অনিয়ম না করলে অবশ্যই এসব নির্দেশনা আসতো না। প্রশাসন বিষয়টাতে এক ধরনের বেকায়দায় পড়েছে বলতে হবে।


Exit mobile version