বোরকা কিনে না দেয়ায় পুঠিয়ায় স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা


পুঠিয়া প্রতিনিধি:

রাজশাহীর পুঠিয়ায় বোরকা কিনে না দেয়ায় পরিবারের উপর অভিমান করে ঘাষ পোড়ানো কিটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে দশম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী আলিমা খাতুন (১৩)।

গত ২৫ শে ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে নিজ বাড়ির কৃষি কাজে ব্যবহীত কিটনাশক পান করে আহত হয়ে ১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আজ (৪ মার্চ) বুধবার বিকেল ৫ টার দিকে সে মৃত্যু বরন করে।

আলিমা খাতুন (১৩) উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের সরিষাবাড়ী গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে। তার মায়ের নাম মোছাঃ লীলা বেগম। সে সরিষাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ ম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী। তার রোল নং ২, সে স্কুলের নিয়মিত ও মেধাবী ছাত্রী হিসেবে কিছুদিন আগে পুরুস্কার জিতেছিলো। তার মৃত্যুতে স্কুলের সহপাঠিসহ এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমেছে।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, আলিমার স্কুলের সহপাঠি কয়েকজন বোরকা পড়ে স্কুলে যেতো তাদের দেখে সেও বোরকা বানিয়ে দেয়ার জন্য বাড়িতে চাপ দেয়।

বোরকা বানিয়ে না দেয়ায় গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারী রাতে এটাকে কেন্দ্র করে তার মায়ের সাথে আলিমার কথা কাটাকাটি হয়। এর এক পর্যায়ে তার মা আলিমাকে শারীরীক নির্যাতনও করে। রাগে সে রাতে না খেয়ে সুয়ে পড়ে পরেরদিন সকাল ১০ টার দিকে আলিমা খাতুন তার বাবার কৃষি কাজে ব্যবহীত ঘাস পোড়ানো কিটনাশক পান করে গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দ্রুত তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে বাঁচানোর আস্থা হারিয়ে ফেলে।

আলিমার বাবা আলমগীর হোসেন জানান, হাসপাতাল থেকে তার বাঁচার আশা হারিয়ে ফেলা হলে আলিমাকে তারা বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর আজ বুধবার বিকেল ৫ টার দিকে তার মেয়ে মারা যায়। তিনি সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, একমাত্র মেয়েটি বোরকা কিনে চেয়েছিলো বোরকা কিনে না দেয়ায় সে অভিমান করে বিষ পান করে।
সরিষাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবাদুল হক জানান, মেয়েটি স্কুলের নিয়মিত ও মেধাবী ছাত্রী ছিলো। তার রোল নং ২ সে এবার স্কুলের নিয়মিত ও মেধাবী ছাত্রী হিসেবে পুরুস্কারও জিতেছে। তিনি ইউনিভার্সেল২৪ নিউজ কে ,বলেন, ঘটনার পর স্কুলের পক্ষ থেকে তার শারীরিক অবস্থা দেখতে পাঠিয়েছিলাম। তখন থেকেই সে কথা বলতে পারছিলো না। কাগজ কলম দেয়া হলে সে লিখেছিলো তার সারা শরীর ব্যথা করছে কথা বলতে পারছে না তবে সে সবকিছু শুনতে পাচ্ছিলো। সামান্য কারনে এমন মেধাবী ছাত্রীর মৃত্যুতে স্কুল কর্তৃপক্ষসহ এলাকার লোক জনের মাঝে শোকের ছায়া নেমে পড়েছে বলেও জানান তিনি।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রেজাউল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে মেয়েটিকে বোরকা কিনে না দেয়ায় অভিমান করে সে ঘাস পোড়ানো কীটনাশক খেয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে ১০ দিন পর সে আজ মারা যায়। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের পক্রিয়া চলছে।


শর্টলিংকঃ