ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিয়ে তদন্ত, সহস্রাধিক অ্যাপ সরিয়ে নিয়েছে ফেসবুক


ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য নিজস্ব প্ল্যাটফর্ম থেকে কয়েক হাজার অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) সাময়িকভাবে সরিয়ে নিয়েছে ফেসবুক। শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটির এক ব্লগপোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

 

ডেভেলপাররা কিভাবে গ্রাহকদের তথ্য ব্যবহার করছে, এ নিয়ে তদন্তের অংশ হিসেবে অ্যাপগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নীতিমালা লঙ্ঘনের দায়ে এক কোম্পানিকে নিষিদ্ধ করাসহ কয়েকটি কোম্পানি ও দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের মার্চে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির পর এ তদন্ত শুরু করে কর্তৃপক্ষ। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুকে বিপুল সংখ্যক ত্রুটিপূর্ণ অ্যাপ রয়েছে যা অকল্পনীয়।

ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি ফাঁস হলে দেখা যায়, ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচন ও ব্রেক্সিটের সময় মতামতকে প্রভাবিত করতে লাখ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য কিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর তদন্ত করে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে ৫ বিলিয়ন ডলার জরিমানা করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন-এফটিসি। পরে ফেসবুক চুক্তির আওতায় অ্যাপস ডেভেলপার কোম্পানিগুলোকে নীতিমালা মেনে চলতে ও অভিজ্ঞতা লাভের বার্ষিক সনদ দিতে একটি প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করে।

ফেসবুক বলছে, তাদের ইকোসিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে অ্যাপ ডেভেলপাররা। এই ডেভেলপাররা পৃথিবীকে আরও বেশি সামাজিক ও সংযুক্ত হতে সহায়তা করে। তবে মানুষের জানা দরকার আমরা তাদের গোপনীয়তার সুরক্ষা দিচ্ছি।

ফেসবুক তাদের ব্লগপোস্টে জানিয়েছে, ৪০০ ডেভেলপার কোম্পানির কয়েক হাজার অ্যাপ ওই ফ্ল্যাটফরম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও লাখ লাখ অ্যাপসের বিষয়ে তদন্ত হয়েছে। তদন্তকারীদের কাছ থেকে আসা তথ্যগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

কোম্পানির নিরীক্ষা নীতি অমান্য করায় মাইপার্সোনালিটি নামের একটি অ্যাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ডাটা অ্যানালিটিকস কোম্পানি র‍্যাকওয়েভের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত নীতি মেনে না চলায় দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্যালিফোর্নিয়ায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

লাভ করতে গিয়ে ম্যালওয়ার দিয়ে ব্যবহারকারীর নাম্বার ক্ষতিগ্রস্ত করার দায়ে লায়নমোবি ও জেদিমোবি নামের দুই কোম্পানি এবং কুইজ অ্যাপ (ব্যাঙ্গাত্মক) ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনের দুই নাগরিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্প্রতি গুগল ও ফেসবুকের বিরুদ্ধে গোপনীয়তার সুরক্ষা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্যে তদন্তের ঘোষণা এবং এফটিসির জরিমানার পর ওই বর্ধিত তদন্তের বিষয়টি সামনে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কয়েকজন প্রার্থী ফেসবুক ভেঙ্গে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তদন্ত ‘শেষ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে ফেসবুক। ওই অভিযোগগুলো তদন্ত করতে টিম আরও বড় করা হয়েছে। ফেসবুকের উন্নয়নে আরও নির্দিষ্ট কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে।


শর্টলিংকঃ