ভাঙ্গুড়ায় কোরবানির পশুর হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ


মানিক হোসেন,ভাঙ্গুড়া(পাবনা):

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কোরবানির পশুর হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ইজারাদারদের বিরুদ্ধে। সরকার নির্ধারিত খাজনা আদায়ের পরিবর্তে অবৈধভাবে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসনের নজরদারী নেই। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। 

শনিবার সরেজমিন পৌর সদরের শরৎনগর বাজার গরু ও ছাগলের হাটে দেখা গেছে, হাটে প্রচুর গরু-ছাগল ও ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম হয়েছে। হাটে পশুর দাম তুলনামূলক কম থাকায় মানুষ উৎসবমূখর ভাবে কোরবানির পশু ক্রয় করছেন। হাটে পুলিশ নকল টাকা সনাক্তের মেশিন দিয়ে টাকা পরীক্ষা ও গর্ভবতী গাভী পরিক্ষার জন্য পশু ডাক্তার নিযুক্ত করা হয়েছে।


এদিকে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক হাটের কোনো স্থানেই খাজনা আদায়-সংক্রান্ত কোনো তালিকা টানানো হয়নি। এতে ক্রেতা-বিক্রেতারা রয়েছেন অন্ধকারে। এ কারণে বাধ্য হয়েই তাদের অতিরিক্ত খাজনা দিতে হচ্ছে।

জানা গেছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি গরু-মহিষের জন্য ৫০০ টাকা ও ছাগল-ভেড়ার জন্য ২৫০ টাকা খাজনা নেয়ার বিধান রয়েছে। ইজারাদারদের এ ধরনের আচরণে ক্রেতারা হাটে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন।


তোফজ্জল আলী, আব্দুল হান্নান, রইচ উদ্দিনসহ একাধিক গরু ক্রেতা জানান, ইজারাদাররা প্রতিগরু থেকে ৬০০ টাকা করে খাজনা নিলেও তারা রশিদে নির্ধারিত খাজনার জায়গা থাকলেও টাকার অঙ্ক লিখা হচ্ছেনা।

আদম আলী, জিনাত আলী, ছানোয়ার হোসেনসহ একাধিক গরু বিক্রেতা জানান, ইজারাদাররা রসিদ লেখার জন্য প্রতি গরু থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নিচ্ছেন।

ক্রেতা মোকছেদ আলী জানান, ৭ হাজার ১০০ টাকায় একটি খাসি ছাগল কিনে ৩শথ টাকা খাজনা দিতে হয়েছে। কিন্তু রশিদে সেই টাকার উল্লেখ নেই। ছাগল বিক্রেতা দৌলত আলী জানান, রসিদ লেখার জন্য নিয়েছে ৫০ টাকা। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের কাছ থেকেই অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তারা প্রতিবাদ করলেও কোনো লাভ হয়নি। তবে গরুর হাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হলে এমনটি হবে না বলে মনে করেন তারা।

অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে শরৎনগর হাটের ইজারাদার সামছুল হোসেন বলেন, এই হাট এক কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডেকে নিয়েছি। সারা বছর টোল আদায়ের যে অবস্থা পুরো টাকা উঠবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছি। তার পরও বেশি খাজনা নেওয়া হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, কোরবানি পশুর হাটে অতিরিক্ত টোল আদায়ের সুযোগ নেই। হাট ইজারা গ্রহীতাদের ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। তবে এ ধরনের অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


শর্টলিংকঃ