ভালোবাসার এ কেমন পরিণতি!


ইউএনভি ডেস্ক:
কুষ্টিয়ার খোকসায় গৃহবধূ মিম খাতুনকে (২২) শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন তার স্বামী সুমন হোসেন (২৮)। ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করেছিলেন সুমন ও মিম। ঠান্ডা মাথায় হত্যার পর মিমের মরদেহ বারান্দার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচারের চেষ্টা চালান সুমন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।

ভালোবাসার এ কেমন পরিণতি!

 

পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন সুমন হোসেন। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতের কাছে স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত শনিবার (৯ মে) গভীর রাতে খোকসা উপজেলার জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের তাহেরপুরে শ্বশুরবাড়িতে মিম খাতুন খুন হন। এ ঘটনায় মিমের ভাই বাদী হয়ে রোববার (১০ মে) খোকসা থানায় মামলা করেছেন।

পুলিশ জানায়, সুমন শনিবার রাতে স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের সঙ্গে অনেক রাত পর্যন্ত বাইরে ছিলেন। বাড়ি ফেরার পর মিম অনেক রাত পর্যন্ত বাড়ির বাইরে থাকার প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হলে একপর্যায়ে সুমন মিমকে মারপিট করে।

এতে মিম জ্ঞান হারিয়ে বিছানার ওপর পরে যান। এ সময় সুমন ঠান্ডা মাথায় নিজ হাতে মিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ শোয়ার ঘরের করিডোরের গ্রিলের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন। পরে প্রতিবেশীদের কাছে প্রচার করেন মিম আত্মহত্যা করেছেন।

নিহত মিম খাতুন উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে।মিমের ভাই মামলার বাদী পলাশ জানান, তিন বছর আগে স্কুলে পড়াকালীন মিমের সঙ্গে সুমনের প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। পরিবারকে না জানিয়ে তারা গোপনে বিয়ে করে। দুই পরিবারের কেউই এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি।

এক পর্যায়ে গত বছর দুই পরিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে মেনে নেয়। তবে বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ লেগেই থাকত। শনিবার রাতে বাবা মিমকে দেখতে জামাই সুমনের বাড়িতে গিয়েছিলেন। ওই দিনই তিনি মেয়েকে দেখে বাড়িতে ফিরে আসেন। পরে রাতে তারা মিমের মৃত্যুর খবর পান।

তিনি আরও জানান, মিমের শরীরের তারা একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছেন।এলাকাবাসী জানায়, সুমন একজন মাদকাসক্ত এবং মাদক বিক্রেতা। কোনো কাজকর্ম করত না। স্ত্রী মিমের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে প্রায়ই সুমনের ঝগড়া হতো।

সুমনের বাবা স্কুলশিক্ষক আলতাফ প্রামানিক বলেন, মিম খুবই অভিমানী ছিল। সামান্য পান থেকে চুন খসলেই মিম নিজের হাত ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে রক্তাক্ত করত।

খোকসা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী জানান, পাবিবারিক কলহের জের ধরে সুমন শারীরিক নির্যাতনের একপর্যায়ে তার স্ত্রী মিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

পরে গ্রিলের সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করেন। ঘাতক সুমন ইতোমধ্যেই মিম হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।


শর্টলিংকঃ