ভ্যাকসিন কীভাবে তৈরি হয় (ভিডিও)


নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনা মহামারীতে আক্রান্ত পৃথিবীর সব কটি দেশ। মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন নাম। এরই মধ্যে তিন লক্ষাধিক মানুষ করোনার থাবায় পাড়ি জমিয়েছে না ফেরার দেশে। আর দুনিয়াজুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। যুগে যুগে এরকম মহামারীতে মানুষ ভেঙে পড়লেও শেষ পর্যন্ত আশা দেখিয়েছে ভ্যাকসিন।

করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে পৃথিবীর বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের সবচাইতে মেধাবী জনশক্তি নিয়োগ করেছে ভ্যাকসিন তৈরীর কাজে। গবেষকদের কেউ কেউ ইতমধ্যে আশার বাণী শুনিয়েছেন। তবে কোনো কোনো গবেষক বলছেন কবে নাগাদ বাজারে আসবে এই ভ্যাকসিন সেটা নিদৃষ্ট করে বলা খুব মুশকিল।
আজকের এই ভিডিওতে আমরা দেখব কিভাবে ভ্যাকসিন তৈরি হয়।

ভিডিও দেখুন এখানে 

জীবাণু থেকেই তার দ্বারা সৃষ্ট রোগের ভ্যাক্সিন প্রস্তুত করা হয়। যেকোন জীবাণুর আছে দুইটি বৈশিষ্ট্য- একটি হল রোগ সৃষ্টি করা, অন্যটি দেহের অভ্যন্তরে ঐ একই রোগের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য অহঃরনড়ফু তৈরী করা।  ভ্যাক্সিন তৈরীর সময় রোগ সৃষ্টির ক্ষমতাটিকে নষ্ট করে দেয়া হয়। কিন্তু অন্য বৈশিষ্ট্যটি ঠিক রাখা হয়। সোজা বাংলায় রোগ সৃষ্টির ক্ষমতাহীন জীবাণুকেই ভ্যাক্সিন হিসেবে দেহে প্রবেশ করানো হয়।

ফলশ্রুতিতে এই জীবাণু দেহে রোগের কারণ হয় না, উল্টো রোগটি যেন না হয় তার জন্য বিশেষ অহঃরনড়ফু তৈরী করতে থাকে। এছাড়াও এই জীবাণুগুলো দেহের ভেতরে মেমরি সেল গঠন করে, ফলে পরবর্তীতে একই জীবাণু দেহে পুনরায় প্রবেশ করলে সহজে তাকে সনাক্ত করতে পারে। এভাবে ভ্যাক্সিন শরীরের ইম্যুনিটিকে বাড়িয়ে দেয়।

ইঞ্জেকশন বা মুখে খাওয়ার মাধ্যমে ভ্যাক্সিন দেয়া যায়। ভ্যাক্সিনেশন দুই প্রকার- রোগ হবার আগেই দেয়া অপঃরাব ভ্যাক্সিন আর রোগ হবার পরে দেয়া চধংংরাব ভ্যাক্সিন। অনেক সময় একটি ভ্যাক্সিনের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এর সাথে আরেকটি ভ্যাক্সিন যোগ করা হয়। একে এডজুভেন্ট বলে। যেমন অ্যানথ্রাক্স ভ্যাক্সিনের সাথে পারটুসিস ভ্যাক্সিন যোগ করলে অ্যানথ্রাক্সের কাজ করার গতি বৃদ্ধি পায়। আবার ভ্যাক্সিন যাতে দূষিত না হয় এজন্য অনেক সময় এর সাথে প্রিজারভেটিভও মেশানো হয়।

মাত্র কয়েক মিলি লিটার তরল যাবে শরীরে, তাতেই আজীবন নিরাপদ থাকা যাবে ভয়ানক সব ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে। এত নিশ্চিত নিরাপত্তা মিলবে ছোট্ট এক ভায়াল ভ্যাকসিন থেকে। সুতরাং সেই ভায়ালের উৎপাদন পদ্ধতিটা যে বেশ জটিল হবে সেটাই খুব স্বাভাবিক।

ভ্যাক্সিন তৈরির ল্যাবের তাপমাত্রা, পিএইচ, অক্সিজেন রেট, ও বায়ো সেফটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। যার কারণে অনেক সময় ভ্যাকসিন তৈরি করতে বেশ সময় লেগে যায়।

আবিষ্কৃত কোন ভ্যাকসিনের এক ব্যাচ তৈরি করতে দুইদিন থেকে তিন মাস পর্যন্ত সময় লেগে যায়। আর অল্প পরিমাণে মূল সেল কালচার সলিউশন থেকে একজন প্রস্তুতকারী লাখ লাখ ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারেন।


শর্টলিংকঃ