- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

ভ্যাকসিন কে আগে পাবে তৈরি হচ্ছে পরিকল্পনা


ইউএনভি ডেস্ক:

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন যে কয়েক সপ্তাহ কিংবা কয়েক মাসের মধ্যে করোনাভাইরাসের অনুমোদিত ভ্যাকসিন উপলব্ধ হবে। এটাও নিশ্চিত যে প্রস্তুতকারকরা উৎপাদন বাড়ানোর পরও এর সরবরাহে ঘাটতি থাকবে। মহামারী প্রতিনিয়ত লাখো মানুষকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে। যেখানে স্বাস্থ্যসেবা কর্মকর্তা, বয়স্ক লোক এবং যাদের অন্য সমস্যা আছে তারাও অন্তর্ভুক্ত। তাহলে সবার আগে কারা ভ্যাকসিন পাবে?

এ সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কৌশলগত পরামর্শদাতা দল বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন বরাদ্দের প্রাথমিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেছে। তারা চিহ্নিত করেছে কাদের অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত।

এ প্রস্তাবগুলো এ মাসের শুরুতে ইউএস ন্যাশনাল একাডেমিকস অব সায়েন্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড মেডিসিনের (এনএএসইএম) করা একটি প্যানেলের খসড়া পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা উভয় পরিকল্পনার প্রশংসা করেছেন। বিশেষ করে তারা এনএএসইএমকে প্রশংসিত করেছেন তাদের পরিকল্পনায় বর্ণ ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের যুক্ত করার জন্য, যাদের ওপর করোনাভাইরাস সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি দিয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিকল্পনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং এ প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করার আগে আরো বিস্তারিত তথ্য প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এরিক টোনার বলেন, সমস্যা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন দলের চিন্তা করা গুরুত্বপূর্ণ। এটা দারুণ ব্যাপার যে এ ইস্যুগুলো নিয়ে এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।

সামনের সারিতে কারা?

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনায় এ পর্যায়ে কোন গোষ্ঠীটি ভ্যাকসিনে অগ্রাধিকার পাবে সে তালিকা দেয়া হয়েছে। এনএএসইএমের নির্দেশনা আবার এক ধাপ এগিয়ে গিয়ে কারা ভ্যাকসিন আগে পাবে, সেই গোষ্ঠীগুলোকে র্যাংকিং আকারে সাজিয়েছে।

এনএএসইএমের পরিকল্পনা অনুসারে স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের পর স্বাস্থ্যগতভাবে দুর্বল অবস্থায় থাকা মানুষদের আগে ভ্যাকসিন পাওয়া উচিত। এখানে অন্তর্ভুক্ত আছে জনবহুল জায়গায় থাকা বৃদ্ধ মানুষ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাযুক্ত লোকেরা (মারাত্মকভাবে হূদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি কিংবা যাদের ডায়াবেটিস আছে), যারা কভিড-১৯-এর সংক্রমণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।

এ পরিকল্পনায় জরুরি শিল্প খাতের শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দেয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন পাবলিক ট্রানজিটে কাজ করা শ্রমিক। কাজের ধরনের কারণে তাদের অনেক লোকের সংস্পর্শে যেতে হয়। একইভাবে, মানুষজন যারা কিনা নির্দিষ্ট ভিড়সম্পন্ন অবস্থার মধ্যে থাকে যেমন গৃহহীন মানুষ, কয়েদি; তারা আগে ভ্যাকসিন পাওয়ার দাবি রাখে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

অনেক দেশের এরই মধ্যে ভ্যাকসিন বরাদ্দের নিজস্ব পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু সেগুলো করোনাভাইরাসের চেয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারীর জন্য বেশি উপযুক্ত। সেখানে সাধারণত গর্ভবতী নারী ও শিশুরা অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। কিন্তু কভিড-১৯-এর পরিকল্পনা ভিন্ন। কারণ অনেক ভ্যাকসিন ট্রায়ালস গর্ভবতী মহিলাদের অন্তর্ভুক্ত করেনি এবং শিশুদের জন্য করোনাভাইরাস ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়ে কম সংক্রামক বলে প্রতিভাত হয়েছে। এনএএসইএম নিজেদের বরাদ্দ পরিকল্পনার একেবারে শেষ পর্যায়ে গিয়ে শিশুদের ভ্যাকসিন দেয়ার বিষয়টি প্রস্তাব করেছে। এনএএসইএম নির্দেশনার বিপরীতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিকল্পনায় সরকারি নেতাদের প্রাথমিকভাবে প্রবেশাধিকার দেয়ার কথা বলেছে।

অনগ্রসর গোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা উভয় পরিকল্পনায় উল্লেখ করা হয়েছে। অতীতের ব্যর্থতার দিকে চোখ রেখে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা ধনী দেশগুলোর কাছে আবেদন জানিয়েছে বরাদ্দের প্রথম দিকেই দরিদ্র দেশগুলোর ভ্যাকসিন প্রাপ্তি যেন নিশ্চিত করা হয়। ২০০৯ সালের এইচ১এন১ ফ্লু মহামারীর সময় নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলো কীভাবে ভ্যাকসিন পাবে তা ঠিক করার আগেই মহামারী শেষ হয়ে গিয়েছিল।

তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবে এখনো এটা বলা হয়নি যে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত দেশগুলো প্রাথমিক ভ্যাকসিনের বড় বরাদ্দ পাবে কিনা।

দ্য নেচার থেকে সংক্ষেপে অনূদিত