মনপুরার সেই কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি বহিষ্কার


ভোলার মনপুরা উপজেলায় কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ওই কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি বাকিব হোসেন রনিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেসনোট সোমবার রাতে গণমাধ্যম কর্মীদের দেয়া হয়।

ভোলা ছাত্রলীগের জেলা শাখার প্যাডে দেয়া ওই জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জেলা ছাত্রলীগের এক জরুরি সভার সিদ্ধান্তে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে মনপুরা কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিব হাসান রনিকে দলীয় পদ থেকে বহিস্কার করা হলো।

ওই জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করনে সভাপতি মো. ইব্রাহিম চৌধুরী পাপন ও সম্পাদক মো. রিয়াজ মাহামুদ।মনপুরার এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৫ দিন ধরে জেলাব্যাপী আলোচনার ঝড় বইছে। মঙ্গলবারও সবার মুখে আলোচনার ঝড় অব্যাহত।

ধর্ষণের ঘটনায় রাকিবকে গ্রেফতার না করায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে। রাকিবকে পালিয়ে যেতে সুযোগ দিয়েছে পুলিশ এমন অভিযোগও রয়েছে।গত শুক্রবার প্রথম মামলা নিতে পুলিশ গড়িমসি করে। পরে উপজেলা নির্বাহী বরাবর দেয়া কলেজ ছাত্রীর লিখিত অভিযোগের পর পুলিশ বিষয়টি আমলে নেয়।মনপুরায় এসব বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

এদিকে আলামত পরীক্ষার জন্য রোববার ওই কলেজছাত্রীকে পুলিশ হেফাজতে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।শনিবার রাতে ভোলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, অভিযুক্ত রাকিবকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে। অন্যায় করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।

বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ বিব্রত বলে জানান উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য একেএম শাজাহান।উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক সুমন ফরাজি জানান, রাকিবের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।অপরদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি গ্রুপের বিরুদ্ধে।

ওই ছাত্রলীগ নেতা রাকিবের বিরুদ্ধে এর আগেও সাকুচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে অপহরণ করার অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের এক শীর্ষ নেতার সেল্টারেই রাকিব হোসেন রনি একের পর এক অপকর্ম করছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

তবে রাকিবের পিতা একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ জানান, তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। ওই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল কিনা তাও তিনি জানেন না।

থানায় লিখিত অভিযোগে ওই কলেজছাত্রী উল্লেখ করেন, রাকিব তাকে গত এক বছর ধরে উত্যক্ত করতো। প্রেমের প্রস্তাব দিলে তা সে প্রত্যাখান করে। এর মধ্যে তার এক আত্মীয়র চিকিৎসার জন্য মনপুরা হাসপাতালে নিতে এলে, রাকিব কথা আছে বলে তাকে হাসপাতালের ছাদে ডেকে নিয়ে যায়। তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এর পর বিয়ের প্রস্তাব দেয়।

ওই ছাত্রী জানান, এমন কি বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য রাকিব ওই ছাত্রীকে বাড়িতে নিয়ে এক দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে। বিষয়টি রনির বাবা, মা ও বোনদের জানালে তারা বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে পরে আনুষ্ঠানিক বিয়ের ব্যবস্থা করা হবে বলে তাকে বাড়ি থেকে বেড় করে দেয়।

বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহম্মেদ বিষয়টি দেখার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন।

মনপুরা থানার ওসি ফোরকান আলী জানান, তারা লিখিত অভিযোগ পেয়ে ওই ছাত্রীর বক্তব্য রেকর্ড করেন। রাকিব হোসেন রনিকে আসামি করে মামলা নেয়া হয়। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। – যুগান্তর


শর্টলিংকঃ