‘মনে রাখবেন ফাঁকা মাঠে আর গোল দেওয়া যাবে না’: রাজশাহীতে নাসিম


মেহেদি হাসান:

বিগত নির্বাচনকে উল্লেখ করে আওয়ামীলীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মো. নাসিম বলেন, আগামী নির্বাচন হবে কঠিন নির্বাচন। মনে রাখবেন ফাঁকা মাঠে আর গোল দেওয়া যাবে না। খালেদা জিয়াকে চা খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে তিনি আসেননি। জামাতের কথায় হরতাল ডেকেছিলেন এমনকি ভারতের রাষ্ট্রপতিকে অসন্মান করেছিলেন খালেদা জিয়া। কি হলো! নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হলাম। খালেদা হাসিনার খেলার মাঠে খালেদা চলে গেলেন। আমার ফাঁকা মাঠে গোল দিলাম। আর বারবার গোল দিয়েছি।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাজশাহী বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে শুরু হওয়া রাজশাহী জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি- বার্ষিকী সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, খালেদার দল বিএনপি হচ্ছে ঘুনে ধরা দল। আপনাদের জীবনের পাতায় পাতায় ভুল। পদে পদে ভুল। একবার ভুল করেছেন দুইবার ভুল করেছেন। এখন মাঠ থেকে চলে গেছেন আপনারা।

রাজশাহী উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে কোথায় নিয়ে গেছে। রাজশাহীর প্রতিটি ঘরে, গ্রামে- গঞ্জে এমন কোন কাজ নাই শেখ হাসিনা করে দেন নাই। টার্গেট হচ্ছে এখন শেখ হাসিনা। মনে রাখবেন, চক্রান্ত হচ্ছে গভীর চক্রান্ত। কোনো দল যখন সফল হয়, চক্রান্ত ততই গভীর হয়।

রাজশাহীতে জামাত বিএনপির তৎপরতা নিয়ে এই প্রবীণ নেতা বলেন, জামাত বিএনপি বিষধর সাপ। রাজশাহীতে বিএনপি জামাত ঝিমিয়ে পড়তে পারে কিন্তু মারা যায়নি। মনে রাখবেন, সময় বুঝে ছোবল দিতে পারে আপনারা সতর্ক থাকবেন। সামনে লড়াই হবে, কঠিন লড়াই। সতর্ক থাকতে হবে। গ্রামে, শহরে-বন্দরে সব জায়গায় শক্ত অবস্থান রাখতে হবে।


রাজশাহীতে আওয়ামীলীগের অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, রাজশাহীতে দুর্গ নাই। রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের দুর্গ পূর্ণ করতে হবে।রাজশাহীর আওয়ামী লীগ নেতা আসাদ ও ফারুক চৌধুরী কে উদ্দেশ্য করে বলেন, তারা রাজশাহীতে অনেক কাজ করেছেন একটা নেতৃত্ব দিয়েছেন।সবসময় তারা সাথে থেকেছেন।

বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আলমগীর আমদের বলেন শেখ হাসিনাকে নাকি উৎখাত করা হবে ইনশাল্লাহ। আপনারা মনে রাখবেন, শকুনের দোয়ায় কখনো গরু মরে না। আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা মাঠে থেকেছি। রাজপথে মার খেয়েছি মাঠ ছেড়ে পালায় নাই। কিন্তু আপনার দল আপনারা মাঠ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।

বিএনপি’র কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা হুমকি দিয়েছেন মাঠে থাকবেন। ইনশাল্লাহ আমরাও মাঠে থাকবো। আপনারা জ্বালাও-পোড়াও করেন আন্দোলন করেন কিন্তু আমরা মাঠে থেকে প্রতিহত করা করব।দলের সাংগাঠনিক উপদেশ দিয়ে রাজশাহীর আওয়ামী কর্মীদের তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে। এসময় দুই হাত তুলে উপস্থিত নেতাকর্মীকে ওয়াদা করিয়ে নেন তিনি।

আত্নপক্ষ সমর্থন করে প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, আমাদেরও ভুল হতে পারে। আমরা ভুলের ঊর্ধ্বে নই। আমার ভুলটাকে মুখের সামনে সমালোচনা করেন কিন্তু গোপনে সমালোচনা করবেন না। পাবলিক সমালোচনা করে আওয়ামীলীগকে ক্ষতিগ্রস্ত করবেন না। এর আগে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর।কিন্তু সেইবার সভাপতি সেক্রেটারি ঘোনার মধ্যেমেই কেবল সম্মেলন শেষ হয়েছিল।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন সমন্বয়ক ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, বাগমারা আসনের এমপি ইঞ্জি. এনামুল হক, পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের এমপি ডা. মনসুর রহমান, পবা-মোহনপুর আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, সংরক্ষিত আসনের এমপি আদিবা আনজুম মিতা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মেরাজ উদ্দিন মোল্লা।

সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সদস্য প্রফেসর ড. আব্দুল খালেক, প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান খানসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীবৃন্দ।


শর্টলিংকঃ