Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

মর্গের সামনে প্রভুভক্ত কুকুরের ৪ মাস অপেক্ষা


ইউএনভি ডেস্ক:

হাসপাতালের মর্গে মালিক। বাইরে তার অপেক্ষায় পোষা কুকুর। এক-দুই দিন নয়, প্রায় চার মাস প্রভুর অপেক্ষায় সেই কুকুর। ভারতের কান্নুর জেলার এই ঘটনাটি অনেকটা বাস্তব জীবনের ‘হাচিকো’র মতো। আকিতা সিনেমায় যেভাবে দেখা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে বিশ্বস্ত কুকুর যে ৯ বছরেরও বেশি সময় ধরে রেলস্টেশনে তার প্রভুর জন্য অপেক্ষায় ছিল। এমনকি তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত – কারণ কুকুরটি জানত না তার প্রভু মারা গেছে।

জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তামাটে ও সাদা রঙের এই কুকুরের মালিককে শনাক্ত করতে পারেনি। তবে মালিকের প্রতি কুকুরটির প্রখর নজরদারি তাদের মনে বিশ্বাস জন্মিয়েছে যে, এর মালিক সম্ভবত একজন রোগী যিনি হাসপাতালে মারা গেছেন এবং তাকে এই মর্গে নেওয়া হয়েছিল। তাই কুকুরটি সেখানে দীর্ঘ সময় চুপচাপ অপেক্ষা করতে থাকে।

মাস চারের আগে রাজেশ কুমার নামে হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা সর্বপ্রথম পোষা কুকুরটিকে মর্গের সামনে র‌্যাম্পে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন। তিনি বলেন, ‘প্রথম দিন আমরা কুকুরটির প্রতি কোনো নজর দিইনি। কিন্তু পরের দিনও যখন কুকুরটিকে সেখানে দেখা যায় তখন আমরা তাকে পর্যবেক্ষণ করি। আমরা খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি কুকুরটি একজন রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছিল। হাসপাতালে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। কিন্তু সেই ব্যক্তিকে শনাক্ত করা যায়নি।’

তিনি বলছিলেন, কুকুরটিকে প্রথম দিকে কিছু খাবার দিলেও খেত না। পরে মানুষের দেওয়া বিস্কুট ও অন্যান্য খাবার গ্রহণ করতে শুরু করে।

রাজেশ কুমার বলেন,‘সাধারণত কুকুরটিকে মর্গের সামনে সেই র‌্যাম্পে পাওয়া যায় যেখান দিয়ে মরদেহ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। মর্গের দরজার বাইরে যেতে দেখা যায় না কুকরটিকে। তার আশা, হয়তো তার প্রভু ফিরে আসবে।তিনি আরও জানান, কুকুরটি কাছাকাছি ফিজিওথেরাপি ভবনে প্রায়ই গেলেও রাতে মর্গে ফিরে আসে। এছাড়া কুকুরটি এলাকার বিপথগামী কুকুরের সাথে মিশে না।

ডা. মায়া গোপালকৃষ্ণ নামে এক ব্যক্তি কুকুরটির এ অবস্থা জানার পর থেকে প্রতিদিন বাড়িতে রান্না করা খাবার এনে তাকে খাইয়েছেন। তিনি বলেন,এটি ডিম ও মাছ খায় কিন্তু ভাত পছন্দ করে না। আমরা জানি না কুকুরের মালিক তাকে কী খাইয়েছিল। ডা. মায়া তার নাম রেখেছেন ‘রামু’।চিকিৎসক জানিয়েছেন, কুকুরটিকে দত্তক নিতে সেখানকার এক মহিলা হাসপাতালে এসেছেন।


Exit mobile version