- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

মানবতার বিবেক: স্বপ্নবাহু তার বঙ্গবন্ধু কন্যার


একজন সাধারণ ব্যক্তির অভিমত: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন মানে উচ্ছ্বাসের সঙ্গে মিশবে রংধনুর বর্ণাঢ্যতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্ভাষণ জানানোর জন্য সংবর্ধনা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে দেশের সর্বস্তরে চলবে সাজসাজ রব। সবাই এতোসব কিছু দেখতে পাবে, কেউ কি প্রধানমন্ত্রীর ছায়াতে একজন কড়া মাকে দেখতে পাবে?

আচ্ছা, আপনাদের কি একজন কড়া মা সম্পর্কে জানা আছে? কেমন হয়ে থাকে এই কড়া মায়েরা? তারা কি সবসময় কড়ায় থাকেন? নাকি একটু আকটু ভালোও বাসেন?একটু ভ্রু কুচকে ভাবছেন নিশ্চয়? উত্তরটা কি দিবেন!

আমিও অনেকটা অনিশ্চিত। বলতে পারেন, আমারো ঠিকঠাক জানা নেই। তবে এটুকু বাজির সাথে বলতে পারি, আমাদের শেখের বেটি আসলেও একজন কড়া মা। প্রয়োজনে কঠোর শাসন, আবার ভালোবাসলে সবটা উজাড় করে দিয়ে ভালোবাসা; এটাই তো কড়া মায়েদের বৈশিষ্ট্য। তার উপর কখনো রক্তচক্ষু তো কখনো সরল চাহনি। কখনো আপোষহীন তো কখনো দয়ার সাগর।

একজন মানুষ, একটাই চরিত্র। অথচ অগণিত রূপ। তখন প্রশ্ন আসে, তিনি আয়রন লেডি নাকি মাদার অফ হিউম্যানিটি? ইদানীং এই প্রশ্নটা আশাকরি সবার মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। ঠিক যেন বীজগণিতের শেষ সূত্রটা মিলছে না এমন একটা পরিস্থিতি।

টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর দল ও সরকারের ইমেজ রক্ষায় হঠাৎ বেশ তৎপর রয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলের ইমেজ রক্ষায় কঠোর অবস্থানে রয়েছেন তিনি। নানা বিতর্কের মুখে ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাকে অপসারণের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন তিনি।

সব ধরণের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে দেশ ও জনগণের স্বার্থে কাজ করতে নেতাকর্মীদের একাধিকবার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর এমন আহ্বানের পরও সরকারের মন্ত্রী ও এমপি থেকে শুরু করে দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। নেতাকর্মীদের কাছে এ যেন এক নতুন নেত্রী।

“যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে বের হয়নি, অস্ত্র উঁচিয়ে প্রতিবাদ করেনি। যখন দলের দুঃসময় ছিল তখন কেউ অস্ত্র নিয়ে দলের পক্ষে অবস্থান নেয়নি। এখন টানা তিন বার সরকারে আছি। অনেকের কাড়ি কাড়ি টাকা পয়সা হয়েছে। কিন্তু আমার সেই দুর্দিনের কর্মীদের অবস্থা একই আছে। যারা অস্ত্রবাজি করেন, যারা ক্যাডার পোষেন, তারা সাবধান হয়ে যান, এসব বন্ধ করুন। তা না হলে, যেভাবে জঙ্গি দমন করা হয়েছে, একইভাবে তাদেরকেও দমন করা হবে”- এক সভায় বলেন প্রধানমন্ত্রী। এক জন প্রধানমন্ত্রী কতটা আপোষহীন ও দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী হলে এমন দীপ্ত কণ্ঠে এমন হুশিয়ারি দিতে পারেন, তা টের পাচ্ছেন অসৎ ও সুযোগসন্ধানীরা।

পিতার কাছ থেকেই মানবিকতার মহৎ গুণ অর্জন করেছেন তিনি। তাই তো বিশ্বসম্প্রদায়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বিপুল সংখ্যক নিপীড়িত ও রোহিঙ্গাদের মতো নিজ গৃহ থেকে বিতাড়িত মানুষের দুঃখ-দুর্দশা আমার হৃদয়কে ব্যথিত করে।

তাইতো মিয়ানমার সরকারের ভয়াবহ নির্যাতনে আশ্রয়হীন ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে নাড়িয়ে দিয়েছেন বিশ্বকে। আজ সারা বিশ্বেই তার নাম আলোচিত হচ্ছে ‘বিশ্ব মানবতার বিবেক’ হিসেবে।

২০০৯ প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মানুষের সমর্থন নিয়ে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। নতুন শতাব্দীতে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানো মূলত সেখান থেকেই, যা গত কয়েক বছর ধরেই অব্যাহত রয়েছে। যদিও নয় ১০ বছর খুব বেশি সময় নয়; অথচ এ সময়েই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তিসহ সব সূচকে যেভাবে তিনি অগ্রগতি, সাফল্য আর উন্নয়নের ধারা সৃষ্টি করেছেন; তাতে সহজেই অনুমেয়-আগামীর বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই তার নেতৃত্বে উন্নত দেশের সারিতে কাঁধ মেলাতে সক্ষম হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দয়ার হাত যেন সমুদ্রের তলদেশের মতো। এইতো সেদিন সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরকে চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন । এটি খুবই সাধারণ ঘটনা হলেও, যখন দেখতে পাই, তিনি আহমেদ শরীফকে ডেকেও অনুদান দিচ্ছেন, তখন বিস্ময় হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। শুধু কি তাই? ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষেও তার ব্যক্তিত্ব যেন আকাশছোঁয়া।

ভালোলাগার লেখাটি হয়তো আরও দীর্ঘায়িত করা যেত। কিন্তু আজ এখানেই শেষ করতে চাই। সৈয়দ শামসুল হকের শেষ কবিতার দুটো লাইন দিয়ে, স্বপ্নবাহু তার বঙ্গবন্ধু কন্যার।