Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

বিনা খরচে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে ‘নিশ্চিত’ নয় ঢাকা


মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ এক বছরেরও বেশি সময় থেকে বন্ধ। তবে ফের নিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে মালয়েশিয়া। ফলে বাংলাদেশের বিরাট এ শ্রমবাজার আবারও উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে নিয়োগের ক্ষেত্রে দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, ‘শূন্য’ খরচের কথা। সত্যিই শূন্য খরচে নিয়োগ সম্ভব কি-না, এ ব্যাপারে নিশ্চিত নয় বাংলাদেশ।

সম্প্রতি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এম কুলাসেগারান তার দেশের সংবাদমাধ্যম ‘মালয়েশিয়ান রিজার্ভ’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, বাংলাদেশ থেকে শূন্য-ব্যয়ে কর্মী নিয়োগের কথা ভাবছে তার দেশ। এক্ষেত্রে অমীমাংসিত ইস্যুগুলো সমাধানের জন্য ঢাকায় প্রতিনিধি পাঠানো হবে। তারা যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বিষয়গুলো তুলে ধরবে।

শূন্য-ব্যয়ে কর্মী নিয়োগের জন্য এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি নেপালের সঙ্গে করা হয়েছে জানিয়ে মালয়েশিয়ার এ মন্ত্রী বলেন, শূন্য-ব্যয়ে কর্মী নিয়োগের আলোচনা অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে এবং আশা করছি শিগগিরই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।চুক্তির আওতায় কর্মী নিয়োগের সার্ভিস চার্জ, যাওয়া-আসার প্লেন ভাড়া, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, সুরক্ষা স্ক্রিনিং ও শুল্ক চার্জ নিয়োগকর্তারাই দেবেন- জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, “গত নভেম্বরে দুই দেশের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মালয়েশিয়া সেই বৈঠক স্থগিত করে। বৈঠক হলেই খরচের বিষয়ে বলা যাবে। তবে মনে রাখতে হবে, ‘জিরো কস্ট’ (শূন্য-ব্যয়) বলে কিছু নেই।”

তিনি বলেন, আমরা বাজারটি খোলার চেষ্টায় আছি। আমরা চেষ্টা করছি, আর কিছু না হোক এর আগে যে খরচ (এক লাখ ৬০ হাজার) নির্ধারণ হয়েছিল, সে খরচের মধ্যেই যেন কর্মীরা যেতে পারে। পারলে আরও কমাব।মালয়েশিয়ার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ইমরান আহমদ বলেন, গত বুধবার (১৫ জানুয়ারি) আমরা বৈঠকের বিষয়ে আবারও চিঠি দিয়েছি। তবে তারা এখনও পরবর্তী বৈঠকের তারিখ জানায়নি। বৈঠকটি এ মাসেও হতে পারে। মালয়েশিয়ার জবাব পেলেই বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারব।


এদিকে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী কুলাসেগারন স্থানীয় রাবার গ্লোভ প্রস্তুতকারীদের অবিলম্বে সামাজিক কমপ্লায়েন্স অডিট রিপোর্ট (এসসিএআর) জমা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ রাবার গ্লোভ আমদানিকারক দেশগুলো টেকসই নিয়োগের বিষয়ে মালয়েশিয়ার রেজুলেশন খুঁজছে।

উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শ্রমবাজার। ২০১২ সালে দু’দেশের মধ্যে জিটুজি পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানোর চুক্তি হলেও পুরোপুরি ব্যর্থ হয় সেই প্রক্রিয়া। এরপর ২০১৬ সালে এসে ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে কর্মী নিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে ঢাকা ও কুয়ালালামপুর। এ পদ্ধতিতে পাঁচটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের সমন্বয়ে কর্মী পাঠানো হচ্ছিল। তবে এ চুক্তির আওতায় মাত্র ১০টি জনশক্তি রফতানিকারক এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেয়া হয়। এসব এজেন্সির কাছ থেকে মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানি কর্মী নিতে পারত।

জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ এ সরকারি খরচ ৪০ হাজারের কম নির্ধারিত হলেও জনপ্রতি কর্মীর কাছ থেকে চার লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা করে নেয় সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। এ চক্রের তৎপরতার কারণে দু’দেশের নেতৃত্ব পর্যায়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশিকর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া।

বাজারটি পুনরায় উন্মুক্ত করতে কূটনৈতিক তৎপরতার অংশ হিসেবে গত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সরকারি সফরে মালয়েশিয়া যান প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ। ওই সফর শেষে দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির চতুর্থ বৈঠক ২৪ ও ২৫ নভেম্বর ঢাকায় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সে বৈঠক স্থগিত করে মালয়েশিয়া।

উৎস: জাগো নিউজ

আরও পড়ুন ‘চীন সর্বোচ্চ সম্মানের সঙ্গে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন করবে’


Exit mobile version