রাজশাহীতে মাস্কের দাম বেশি নেয়ায় জরিমানা


নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহীতে নির্ধারিত দামের চেয়ে মাস্কের দাম অতিরিক্ত নেওয়ার অভিযোগে রিয়া সার্জিক্যাল এন্ড ড্রাগ হাউজকে জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ অভিযান ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন।

মাস্কের দাম
অভিযানে নেতৃত্ব দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকারের এডি হাসান আল মারুফ

জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। আর এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার চেয়ে বেশি রয়েছে আতঙ্ক। এক্ষেত্রে সাধারণ মাস্কের চেয়ে জীবাণু প্রতিরোধক মাস্কের চাহিদা রাজশাহীতে বেশি লক্ষ্য করা গেছে।  ক্লিনিকপাড়া নামে পরিচিত নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় অবস্থিত  বিভিন্ন ফার্মেসিতে এ ধরনের মাস্ক সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। সিনথেটিক কাপড় ফাইবার দিয়ে তৈরি এ মাস্কগুলো। তবে স্বল্পতার  অযুহাতে দাম আগের চেয়ে হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এছাড়া ফুটপাতে হকারদের কাছেও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা ও বিক্রির চাপ। এছাড়া বিভিন্ন ওষুধের দোকানে মেডিকেটেড মাস্ক তো দূরের কথা সাধারণ মাস্কই পাওয়া যাচ্ছে না। আর যা পাওয়া যাচ্ছে তার দাম কোথাও দ্বিগুণ অথবা তিনগুণ।

এ বিষয়ে ফারুক হোসেন নামে একব্যক্তি জানান, ওষুধের দোকানে মাস্কের সাধারণত ৫ টাকা ছিল।  কিন্তু এখন দাম চাইলো ২০-৩০ টাকা।  এখন দামের এই বিশাল ফারাক। এখন সরকারসহ সবাই মাস্ক ব্যবহার করতে বলছে, আমরাও ব্যবহার না করেই বা কী করবো? ফারুকের মতই অনেকেই আতঙ্কে মাস্ক কিনছেন।

এদিকে করোনা ভাইরাস ৩০ শতাংশ হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায় উল্লেখ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. সেবরিনা ফ্লোরা গণমাধ্যমকে বলেছেন, এ রোগ ৩০ শতাংশ মানুষ থেকে মানুষে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। তাই মাস্ক ব্যবহার করা ভালো। তবে বাংলাদেশে এ রোগে আক্রান্ত কেউ নেই।

মাস্কের দাম
মাস্ক ব্যবহারের নিয়ম

তবে মানুষ থেকে মানুষে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার বৈশিষ্ট্যের কারণে আতঙ্কিত হলেও চিকিৎসকরা বলছেন, মাস্কের প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশে নেই। কেননা আমাদের দেশে এ রোগী নেই। থাকলে প্রয়োজন ছিল। আবার সরকারের এ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান মাস্ক পরতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছে। ফলে দ্বিধাবিভক্ত সাধারণ জনগণ গণহারে মাস্ক ব্যবহার করছে। তবে এতে কোনো ক্ষতি নেই, বরং উপকারই হচ্ছে বলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। কিন্তু এ সুযোগে  অসাধু মাস্ক ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দাম হাঁকিয়ে অনৈতিকভাবে মাস্ক বিক্রি করে চলেছেন।

মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, মাস্ক পরে অর্থ অপচয় করার দরকার নেই। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বা ধরা পড়লে মাস্ক পরলেই চলবে। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে নিজেকে সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

এদিকে, জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ ইউনির্ভাসাল২৪নিউজকে জানান, নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ের রিয়া সার্জিক্যাল এন্ড ড্রাগ হাউজে মাত্র ৫টাকা মুল্যে একটি মাস্কের দাম ২০টাকা নেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট ক্রেতা এ বিষয়ে অভিযোগ করেন। পরে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের একজন কর্মী সাধারণ ক্রেতা সেজে ওই দোকানেই মাস্ক কিনতে যার। তার কাছে ৫টাকার মাস্কের দাম ২০টাকা নেয়া হয়। এসময় পাশেই ছিলো জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিকার অধিদপ্তরের টিম।  হাতেনাতে  প্রমাণ পাওয়ায় রিয়া সার্জিক্যাল এন্ড ড্রাগ হাউজকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি অন্য দোকানদারকেও এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়তে পারেন ইনকোর্স ও উপস্থিতির নম্বর তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত সর্বনাশ করতে পারে


শর্টলিংকঃ