মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন নাসিম


ইউএনভি ডেস্ক : 
রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম।  রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। বনানী কবরস্থানেই শায়িত আছেন নাসিমের বাবা জাতীয় চার নেতার একজন এম মনসুর আলী।

দাফনের আগে বনানী কবরস্থান মসজিদে মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানাজার পর এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। বনানীতে জানাজা শেষে প্রথমে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে নাসিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাঁর সামরিক সচিব নাসিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর সোবহানবাগ মসজিদে নাসিমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কিছুক্ষণের জন্য মরদেহ তাঁর ধানমন্ডির বাসভবনে নেওয়া হয়।

বনানীতে জানাজা ও শ্রদ্ধা জানানো শেষে নাসিমের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বনানী কবরস্থানে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁকে দাফন করা হয়। সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় জানাজা ও দাফন কাজে পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা ছিল।

করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সীমিত পরিসরে নাসিমের জানাজার ব্যবস্থা করে আওয়ামী লীগ। বারবার সবার উদ্দেশে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

নাসিমের জানাজায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ অনেকেই অংশ নেন।

টানা প্রায় দুই সপ্তাহ হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গতকাল শনিবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন মোহাম্মদ নাসিম। তিনি রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে গত ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মোহাম্মদ নাসিম। ওই দিনই তাঁর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ৪ জুন তাঁর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে তিনি স্ট্রোক করেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যার কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাঁকে আইসিইউতে রাখা হয়। এরপর দুই দফায় ৭২ ঘণ্টায় করে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখে মেডিকেল বোর্ড।

এর মধ্যে পরপর তিনবার নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি তাঁর শরীরে। কয়েক দিন স্থিতিশীল থাকলেও গত বৃহস্পতিবার রক্তচাপ অস্বাভাবিক উঠানামা করতে থাকে নাসিমের। গত শুক্রবার পরিস্থিতি আরও জটিল হতে থাকে। তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রেও জটিলতা দেখা দিয়েছিল।

মোহাম্মদ নাসিম বর্তমান সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও ছিলেন তিনি।

২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান মোহাম্মদ নাসিম। এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।


শর্টলিংকঃ