যুবলীগের হুমকিতে পরিবারসহ পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সাবেক নেতা


নিজস্ব প্রতিবেদক :

যুবলীগের হুমকিতে নওগাঁ জেলা যুবলীগের সাবেক নেতা কামাল সিদ্দিকী বাবু অসহায় হয়ে পড়েছেন। তার বাড়িতে হামলার ঘটনার আটদিন পার হলেও এখনো মামলা নেয় নি পুলিশ।  উল্টো অভিযুক্তরাই তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ বাবুর। এ অবস্থায় তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন। এঘটনার পরই কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল হামলাকারী পিটু ও বিমানকে ঢাকায় তলবও করেছিলেন। কিন্তু এরপর আরো বেশি বেপরোয়া তারা। নওগাঁ সদর থানার ওসি হোসেন সৈয়দ সোহরাওয়ার্দী বলেন, ‘এধরনের কোনো ঘটনার কথা আমার মনে পড়ছে না’। 

যুবলীগের হুমকিতে

কামাল সিদ্দিকী বাবু জানান,  তিনি গত ২ ডিসেম্বর রাত ১০ টার দিকে নিজের ফেসবুকে জেলা যুবলীগের বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট খোদাদাদ্ খান পিটু ও সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায়ের বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম ও নৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তুলেছিলেন। এর  দু্ই ঘণ্টা পরই রাত সোয়া ১২ টার পর পিটু ও বিমানের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ের উকিলপাড়া মোড়ে তার বাড়িতে হামলা করে। এসময় তারা  মটরসাইকেলসহ আসবাপত্র ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এবং নগদ টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী  লুট করে নিয়ে যায় ও আগুন ধরিয়ে দেয়।  পরে স্থানীয় লোকজন  খবর দিলে পুলিশ এসে  তাদের রক্ষা করে।  এঘটনার পর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয় নি।  এমন কি অভিযোগের রিসিভ কপিও দেয় নি।

কামাল সিদ্দিকী বাবু বলেন,  আমার বাবা মৃত এ্যাডভোকেট সামসুল হক সিদ্দিকী যিনি নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পরবর্তীতে নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের একজন সংগঠক হিসাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৫ সালে নওগাঁ জেলা বাকশাল কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। মৃত্যুর সময়ও তিনি নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ছিলেন।  আমি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। ছাত্রলীগের রাজনীতি শেষ করে আমি ওয়ার্ড যুবলীগ ও পরবর্তীতে জেলা যুবলীগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু যারা আমার উপর আক্রমণ করেছিলো  আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কী তাদের অবদান?

যুবলীগের হুমকিতে

কামাল সিদ্দিকী বাবু ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে বলেন,  ‘আমি গোটা পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। কখনো কোনো অন্যায় বা অপকর্মের সাথে আমরা আপোস করি নি।  গত ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আমি সভাপতি প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু পিটু জেলা যুবলীগের সভাপতি  নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠেন। চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদ করায় আমার জীবন এখন শঙ্কায় পড়েছি।  ‘আমাকে বাঁচান’ বলে তিনি অসহায়ত্ব প্রকাশ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন,  ‘হামলার পর থেকে আমি স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে আত্মগোপনে আছি। যে কোনো সময় তারা আমাকে মেরে ফেরতে পারে। তাই আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি জীবনের নিরাপত্তা চাই’।

যুবলীগের হুমকিতে সাবেক নেতা কামাল সিদ্দিকী বাবু অসহায় হয়ে পড়েছেন, এবিষয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট খোদাদাদ্ খান পিটু ও সাধারণ সম্পাদক বিমান কুমার রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা দু’জনেই কথা বলতে চান নি। তারা দুজনেই ক্ষিপ্ত হয়ে উল্টো এ প্রতিবেদকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।

পরে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল ইউনিভার্সাল২৪নিউজ-কে বলেন, ‘বাবুর বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়ার  পরই আমি পিটু ও বিমানকে ঢাকায় তলব করেছিলাম। তাদের কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। বিষয়টি এখন তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের  বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

আরও পড়তে পারেন চীনে স্কলারশিপে পড়ার সুযোগ


শর্টলিংকঃ