যে সিনেমার গল্পের সঙ্গে মিলে যায় জীবন


ইউএনভি ডেস্ক:

‘আমরা বেশির ভাগ মানুষ জীবন যাপন করি সত্যিকারভাবে না ভেবেই, না দেখেই, না বুঝেই; যে আমরা কতটা জটিল, একে অপরের সঙ্গে কতটা যুক্ত, কতটা ভঙ্গুর…। একদিন কিছু একটা ঘটল, এমন একটা কিছু; যা আপনাকে বিশ্বের দিকে তাকানোর ভঙ্গি বদলে দিল, বিশ্বকে দেখার ভঙ্গি বদলে দিল। আপনার জীবনকে আমূল বদলে দিল।’

যে সিনেমার গল্পের সঙ্গে মিলে যায় জীবন

কথাগুলো নাইনটি থ্রি ডেজ সিনেমার একটি চরিত্রের। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের মানুষের উপলব্ধির সঙ্গে আজ এই কথাগুলোর কতই–না মিল! কে কবে ভেবেছিলেন একই সঙ্গে সবাইকে চেনা পরিবেশের রাতারাতি পাল্টে যাওয়াকে এতটা অবিশ্বাস, আতঙ্ক, অনিশ্চয়তা নিয়ে দেখতে হবে! একই সঙ্গে সবাইকে লড়তে শেখাবে!

নাইনটি থ্রি ডেজ সিনেমাটিতে সেই ভয়, হতাশা ও লড়াই করার কথাই আছে। সিনেমাটির গল্প একটি হাসপাতালকে কেন্দ্র করে। তাই চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিটি চরিত্রের মধ্যে নিজেদের খুঁজে পেতে পারেন। সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে ২০১৪ সালে নাইজেরিয়ায় ইবোলা প্রাদুর্ভাবে মৃতদের স্মরণে সত্য ঘটনার ভিত্তিতে। সিনেমাটিতে দেখানো হয়, ২০১৪ সালে ইবোলায় আক্রান্ত দেশ লাইবেরিয়া থেকে আসা এক কূটনীতিকের তথ্য গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু এবং সেখানে তাঁর সংস্পর্শে আসা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কীভাবে ইবোলায় আক্রান্ত হন, সেই কাহিনি। ওই কূটনীতিকের হাসপাতালে ভর্তির সময় থেকে নাইজেরিয়াকে ৯৩ দিন পর ইবোলামুক্ত ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

কার না জীবনের সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক অধ্যায়টিকে ইরেজার দিয়ে মুছে ফেলতে ইচ্ছে করে। কার না ঘটনার আকস্মিকতায় যা হারিয়েছেন, তার জন্য অন্যকে দায়ী মনে হয়। কেউ শুধু ভেবে যান, আবার কেউ যা ঘটেছে তা মেনে না নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখান তীব্রভাবে। ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া মার্কিন প্যারাসাইকোলজিক্যাল থ্রিলার ফ্র্যাকচারড সিনেমাটিতে রে নামের চরিত্রটিকে দেখা গেছে এমন ভূমিকায়। গ্যাসস্টেশনে স্ত্রী ও শিশুকন্যা পেরি দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার পর দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যান রে। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পর ঘটতে থাকে একের পর এক ঘটনা। রে যা দেখছিলেন, তা অন্যরা দেখছেন না। তাহলে মিথ্যা কে বলছেন? দেখতে হলে ছবিটি ঝটপট দেখে ফেলুন।

দেশের তরুণ নির্মাতাদের একটি সিনেমাও দেখে নিতে পারেন এখন। ইতি, তোমারই ঢাকা হলফ করে বলা যায়, ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের ১১টি গল্পের এই সিনেমা আপনাদের হতাশ করবে না। ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের সিনেমাটিতে ১১ জন নির্মাতার ১১টি ছবি রয়েছে।

একেকটি সিনেমার দৈর্ঘ্য ১০ থেকে ১২ মিনিট। কোনোটায় রয়েছে ব্যাকগ্রাউন্ড আর্টিস্ট খায়রুলের কথা, যাঁকে বাস্তব জীবনে একবার নামতে হয়েছিল অন্যের ভূমিকায়। এক ধনী লোকের গাড়ির ড্রাইভারের কথা রয়েছে, যিনি বসের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত জীবন দেখে নিজেও কীভাবে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন, কীভাবে বসের স্মার্ট স্ত্রীকে দেখে নিজের গ্রাম্য বধূকে ‘পানসে’ ভাবতে শুরু করেন। রয়েছে পুরোনো গাড়ি বিক্রির ব্যবসা করা এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কথা, যিনি অন্যের গাড়ি বিক্রি করতে গিয়ে কীভাবে চোর সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েন। আছে নিম্নমধ্যবিত্ত যূথীর কথা, নিজের সংসার পাতার স্বপ্ন যাঁর কাছে কঠিন হয়ে পড়ে স্বামীর ছোট চাকরির কারণে, স্বামীর জৈবিক চাহিদা মেটাতে যাঁকে যেতে হয় সস্তার হোটেলে।

তিনটি সিনেমাই আপনারা পাবেন নেটফ্লিক্সে।


শর্টলিংকঃ