যোগব্যায়ামের নানা উপকারিতা


বিপাশা আনজুম ঊষা: 

ইয়োগা বা যোগব্যায়াম একটি শাস্ত্রীয় কৌশল, যা পাঁচ হাজার বছরের পুরনো। প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের মুনি ঋষিরা তাদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখা এবং দীর্ঘজীবনের জন্য বিভিন্ন কলা-কৌশল আবিষ্কার বা আয়ত্ত করেন।  যোগব্যায়াম শরীর ও মনের ব্যায়াম। এ ব্যায়াম থেকে শরীর ও মন উভয়ের উপকার হয়ে থাকে। 

যোগোব্যামের রয়েছে নানা উপকারিতা ওজন কমানো থেকে শুরু করে শক্তিশালী নমনীয় শরীর, উজ্জ্বল ত্বক, শান্ত মন, ভালো স্বাস্থ্য ইত্যাদি যা কিছু আমরা পেতে চাই সব কিছুর চাবি আছে যোগাসনে। এতে অনেক রকম শারীরিক সমস্যা যথা-উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, করোনারি আর্টারি ব্লকের ইত্যাদি রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিকভাবে সুস্থ জীবন কাটানো সম্ভব।

ফিটনেস: শারীরিকভাবে সুস্থ মানেই কিন্তু পুরোপুরি ফিট থাকা নয়। তখনই পুরোপুরি ফিট যখন মানসিক, আধ্যাত্মিক, শারীরিক ও সামাজিকভাবেই আপনি সুস্থ থাকবেন। আপনার আবেগ থাকবে আপনার নিয়ন্ত্রণে। কথায় বলে, রোগের অনুপস্থিতি কিন্তু স্বাস্থ্য নয়, স্বাস্থ্য হল জীবনের বহুমুখী বহিঃপ্রকাশ। আপনি কতটা আনন্দ এবং উৎসাহের সঙ্গে জীবনকে উপভোগ করতে পারছেন সেটাই কিন্তু আপনরার স্বাস্থ্যের প্রমাণ। যোগাসন আপনাকে দেয় পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য। আপনাকে সর্বদা ফিট রাখে শারীরিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক সবভাবেই।

স্ট্রেস বা চাপ কমায়: সারা দিনের কাজের চাপে আমরা সবাই কমবেশি কাহিল হয়ে পড়ি। কাজশেষে বাড়ি ফেরার পর ক্লান্ত লাগে। অনেক সময়ই মেজাজ খারাপ থাকে। এর কারণ স্ট্রেস। শারীরিক এবং মানসিক দু’ভাবেই অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ি। যোগাসন এর থেকে মুক্তি দেয়। যোগাসন, প্রাণায়াম এবং ধ্যান করে স্ট্রেসকে দূরে রেখে প্রাণোচ্ছল জীবনযাপন করা সম্ভব।

মানসিক শান্তি: মানসিক শান্তি কে না চায়? মানসিক শান্তি পাওয়ার জন্য আমাদের কতই না প্রচেষ্টা। আমরা সুন্দর জায়ায় ঘুরতে যাই, ভালো গান শুনি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে সময় কাটাতে চাই তবে নিয়মিত মানসিক শান্তি পাওয়ার জন্য এত কিছু করার দরকার নেই। নিয়ম করে একটু যোগাসন, ধ্যান, প্রাণায়াম, নিউরোবিক ইত্যাদির মাধ্যমে মনোঃসংযোগ এবং মানসিক শান্তি উভয়ই বাড়ানো সম্ভব। অভ্যাস করে দেখুন, নিশ্চিত ফল পাবেন।

প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: নিয়মিত যোগাভ্যাস আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। চারদিকে এখন এত দূষণ যে সবসময় নানারকম জীবাণু আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে এবং ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকা দরকার। যোগাসন রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে টিস্যু এবং পেশিকে শক্তি দেয়। শ্বেতকণিকাগুলোকে আরও উজ্জীবিত করে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শ্বাস-প্রশ্বাসের টেকনিক এবং ধ্যানও এতে সাহায্য করে।

এনার্জি বাড়ায়: দিনশেষে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। বাড়ি ফেরার পর এনার্জি অবশিষ্ট থাকে না। মাত্র কয়েক মিনিটের যোগাভ্যাস কিন্তু সারা দিনের পরও এনার্জির জোগান দেবে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে কিছুক্ষণ যোগাসন করলে কাজের ফাঁকেও ফ্রেশ আর এনার্জেটিক থাকা যাবে।

সুস্থ সুন্দর সম্পর্ক: যোগাভ্যাস আমাদের কাছের মানুষ অর্থাৎ বাবা, মা, বন্ধু, স্বামী, স্ত্রী, আত্মীয়, পরিজন, অফিস কলিগ সবার সঙ্গেই সম্পর্ক ভালো রাখতে সাহায্য করে। সুস্থ, রিল্যাক্সড মন সবসময় সম্পর্কের খুটিনাটিগুলোকে ভালো বুঝতে পারে। আর সম্পর্কের বিষয়টি যেহেতু খুব স্পর্শকাতর তাই অত্যন্ত সাবধানতার সাথে বিষয়টির প্রতি লক্ষ্য রাখা উচিত।


শর্টলিংকঃ