Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

নওগাঁয় যৌন উত্তেজক ঔষধ খাইয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণ


নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:

নওগাঁর মান্দা উপজেলার কাশোঁপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান) মো. রেজাউল হকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত মেধা বৃদ্ধির প্রলোভন দেখিয়ে যৌন উত্তেজক ও চেতনা নাশক ঔষধ খাইয়ে ওই বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল পলাতক রয়েছেন।

এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতীতেও এই ধরনের একাধিক ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে জানা যায়, গত ২৫ মার্চ বুধবার স্কুল ছুটির দিন সকাল ১০ টায় বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে আসে। পরে ওই শিক্ষক ছাত্রীকে মেধা বৃদ্ধির কথা বলে যৌন উত্তেজক ওষুধ খাওয়ায়। পরে টিনের একটি শ্রেণি কক্ষে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায় বিদ্যালয়ের নতুন ভবনে কাজ করা কিছু শ্রমিকরা। এরপর বিষয়টি জানতে পারে স্থানীয়রা।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীদের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় ঘটনার ১দিন পর ২৭ মার্চ শুক্রবার স্কুল ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল হককে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় ওই শিক্ষক গত শুক্রবার থেকে পলাতক রয়েছে। এতে করে ওই এলাকাবাসীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, এই শিক্ষকের চরিত্র বলে কিছু নেই। তার বর্তমান স্ত্রীও তার ছাত্রী ছিলো। ধরা পড়ে বিয়ে করেছে। আমরা এলাকাবাসী এই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বলেন, এই ঘটনায় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি ও প্রধান শিক্ষক এক জরুরী সভার মাধ্যমে গতকাল শুক্রবার তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। শুধু বরখাস্তই নয় এই লম্পট শিক্ষকের আমরা দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তি চাই।

এবিষয়ে কাশোপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মকসেদ আলী প্রামাণিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি বিষয়টি জানার সাথে সাথে রেজাউল হককে ডেকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম। রেজাউল তার অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেছেন ভবিষ্যতে তিনি এমন কাজ আর করবেন না।

বিদ্যালয়ের সভাপতি আল-মামনুর রশিদ (আলম) বলেন, গত ২৫ তারিখের ঘটনাটি জানার সাথে সাথে আমি প্রধান শিক্ষককে জরুরি মিটিং কল করতে বলেছিলাম। ২৭ তারিখের ওই মিটিংয়ে শিক্ষক রেজাউল হক তার অপরাধ স্বীকার করে নিজে থেকেই পদত্যাগ করেছেন। মিটিংয়ের পরবর্তী দিন শনিবার (২৮ মার্চ) তার পদত্যাগের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি নিজেও ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আমার কাছে আগে প্রতিষ্ঠান পরে শিক্ষক। এমন শিক্ষকের জন্য আমি প্রতিষ্ঠান নষ্ট করতে পারিনা।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক রেজাউল করিম তার পদত্যাগের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি ওই ছাত্রীর সাথে রুমে শুধু গল্প করেছি এবং বলেছি আজ স্কুল এবং প্রাইভেট ছুটি আছে তুমি স্কুল থেকে চলে যাও। আমি তার সাথে কোন খারাপ কিছু করিনি। এটা একটা চক্রান্ত। অপরাধ না করে থাকলে পদত্যাগ করলেন কেনো, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. শাহ আলম শেখ বলেন, এখন পর্যন্ত আমি এবিষয়ে লিখিত ভাবে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


Exit mobile version