রমজান মাসে ডায়েট?


পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়ে গেছে। রোজাদারদের তো সারা দিন না খেয়ে থাকতে হয়, ফলে অনেকেই মনে করেন, এই মাসে খাদ্যতালিকায় দৃষ্টি না দিলেও চলবে। অন্য সময়ে যাঁরা ডায়েট করেন, তাঁদের সাধারণত ঘণ্টায় ঘণ্টায় কিছু না কিছু খেতে হয়। রমজান মাসে তাঁরা বুঝে উঠে পারেন না, কীভাবে ডায়েট করবেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, রমজানে সঠিক নিয়ম মেনে ডায়েট করতে পারলেই শরীরকে নিজের ইচ্ছামতো গঠন করা সম্ভব। অন্তত ডায়েটেশিয়ানরা তেমনটাই বলছেন।

রমজানে ডায়েট
যাঁরা নিয়মিত ডায়েট করেন, তাঁরা রমজানে সারা দিন না খেয়ে থাকা আর রমজান শেষে ঈদের আগমনের অপেক্ষায় নিজের ডায়েট ভুলে যান। কিন্তু স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে রমজান মাসেও ডায়েট করার বিকল্প নেই। বেশির ভাগ মানুষই সারা দিন রোজা রেখে সন্ধ্যায় ইফতারে, রাতে এবং সাহ্রিতে এত বেশি খাবার খেয়ে ফেলেন, যা তাঁদের দৈনন্দিন চাহিদার চেয়ে বেশি হয়ে যায়। তাই নিজের শরীরকে ঠিক রাখতে কিছু নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

পুষ্টিবিদ আখতারুন নাহার আলো বলেন, রমজানে ইফতারের সময় ক্ষুধা বেশি থাকায় অনেক খাবার খেয়ে ফেলা যাবে না। তেলজাতীয় বা চিনিমিশ্রিত যেকোনো খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। ইফতারের সময় ফলমূল, চিড়া, সবজি দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়া যেতে পারে। বেশি ক্ষুধা লাগলেও পরিমিত খাবার খেতে হবে। ইফতারে হালকা খাওয়ার কিছুক্ষণ পরে রাতের খাবার খেতে হবে। বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। সাহ্রিতেও খুব ভারী খাবার খাওয়া ঠিক নয়।’

প্রচুর পরিমাণে পানি
রমজানে নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ইফতার থেকে সাহ্রি পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা। নিয়ম করে সাহ্রির সময় ২ গ্লাস, রাতের খাবার ও সাহ্রির আগে ৪ গ্লাস ও সাহ্রির সময় ২ গ্লাস পানি খেলে পানির চাহিদা পূরণ হয়। তা ছাড়া এই পানি সুগার লেভেলকেও নিয়ন্ত্রণে রাখবে।

হালকা ইফতারি
সারা দিন না খেয়ে থাকার পর ইফতার করা হয়, তাই পুরো রমজানে ইফতারে আপনি কি খাচ্ছেন, তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ইফতারে কোনোভাবেই পেট ভর্তি করে খাবার খাওয়া যাবে না। কিছুক্ষণ পরেই রাতের খাবার খাবেন এই চিন্তা করেই লেবুর শরবত, একটি খেজুর, সালাদ, টক দই, মৌসুমি ফলমূল বা জুস দিয়ে ইফতার সেরে ফেলুন। যাঁদের ডায়াবেটিস আছে তাঁরা বিকল্প চিনি দিয়ে লেবুর শরবত বানিয়ে খাবেন। ভাজাপোড়া থেকে একদমই দূরে থাকবেন। বেশি ভাজাপোড়া খেলে বদহজম, বমি, গ্যাস হতে পারে।

সাহ্রিতে পরিমিত খাবার
রমজানের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে সাহ্রি। অনেকেই রাতে অনেক বেশি খাবার খেয়ে আর সাহ্রি গ্রহণ করতে চান না। কিন্তু সুস্থ থাকার জন্য এটি সঠিক পথ নয়। সারা দিন নিজেকে তৃষ্ণা ও ক্ষুধা থেকে বিরত রাখতে চাইলে সাহ্রিতে পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন, আয়‌োডিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ফল, সবজি সেদ্ধ, সবজি সালাদ, দুধ বা টক দই, ভাত বা রুটি, মাছ বা মুরগির মাংস অথবা ডিম ও ডাল খেতে হবে।
রমজানে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সারা দিন ঘুমিয়ে থাকা সঠিক উপায় নয়। দৈনন্দিন কাজ আগের মতো করতে থাকুন। যাঁরা অন্য সময়ে সকালে ব্যায়াম করতেন, তাঁরা ইফতারের পর নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন, সারা দিন খালি পেট থাকার ফলে আপনার চর্বি সহজে কমিয়ে ফেলতে পারবেন।


শর্টলিংকঃ