Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

রাজশাহীতে জাল টাকা তৈরি চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীতে জাল টাকা তৈরি চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) গভীর রাতে নগরীর কাটাখালি থানার দেওয়ানপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে। বুধবার (২০ মার্চ) সকালে নগরীর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- কাটাখালি থানার শ্যামপুর পশ্চিমপাড়ার সামাউন আলীর ছেলে জনি হাসান (২৪), একই এলাকার মাসুদ রানার ছেলে জনি আলী (২২), জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে ইনসান মিয়া (২২) এবং পবা উপজেলার হরিয়ান পশ্চিমপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম রেজুর ছেলে সুমন রানা (২৪)।

তাদের কাছ থেকে ৮ লাখ ১২ হাজার জাল টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার চারজনের বিরুদ্ধে রাতেই বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা করা হয়। বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারেও পাঠানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মহানগর ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার আবু আহাম্মদ আল মামুন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই চারজনকে ৮১২টি ১০০০ টাকার জাল নোটসহ গ্রেফতার করা হয়। অভিযানের সময় তারা নোটগুলো বিক্রির জন্য একটি ফিলিং স্টেশনের সামনে অপেক্ষা করছিলেন।

তাদের সবার কাছেই জাল নোট পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সুমন রানার দোতলা বাড়ির নিচতলা থেকে জাল নোট তৈরির প্রিন্টার ও কাগজসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, সুমন রানা রাজশাহী কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছেন। অন্য তিনজন স্বল্প শিক্ষিত। গ্রাফিক্সে পারদর্শী সুমন জাল নোট তৈরি করতেন। জনি হাসান ও জনি আলী বিভিন্ন স্থানে জাল নোট বিক্রি করতেন।

আর ইনসান মিয়া একজন মাদক ব্যবসায়ী। তিনি জাল নোট দিয়ে মাদক কিনে প্রতারিত করতেন। ইতিপূর্বে ইনসান মাদকসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তবে পবা উপজেলার দামকুড়া বাজারে ইনসানের মোটরসাইকেল মেকানিকের দোকান আছে। মেকানিকের কাজের আড়ালে এসব অপকর্ম করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জনি হাসান শিবিরকর্মী ও জনি আলী ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, এরআগেও তারা প্রায় ৭ লাখ জাল টাকা বিক্রি করেছেন।

আসল ১০ হাজার টাকায় তারা ১ লাখ জাল টাকা বিক্রি করতো। জাল টাকা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাদক কেনাবেচায় ব্যবহার করা হতো। তারা যাদের কাছে এসব নোট বিক্রি করেছেন তাদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুটি বাড়িতে অভিযান চালায় র‌্যাব। সেসময় দুই বাড়ি থেকে ৬০ লাখ ভারতীয় জাল রুপি জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার হন দুইজন।

এদের মধ্যে রাজশাহীতে গ্রেপ্তার হওয়া দরদুজ্জামান বিশ্বাস ওরফে জামান (৫৭)টাকা জালকারি চক্রের মূলহোতা। ১৯৮৮ সাল থেকে জাল টাকা এবং ভারতীয় জাল রুপি তৈরির এই কারিগর ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘মোস্ট ওয়ানটেড’ তালিকায়।

দরদুজ্জামানের সঙ্গে গ্রেপ্তার চারজনের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা জানতে চাইলে মহানগর ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা আবু আহাম্মদ আল মামুন বলেন, এটি এখনও নিশ্চিত নয়। তবে তারা কারও না কারও কাছে জাল টাকা তৈরির কৌশল শিখেছেন। সে ব্যাপারে কিছু তথ্যও পাওয়া গেছে। সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জাল টাকার কারিগরদের ধরতে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


Exit mobile version