রাজশাহীতে বিপদসীমার সাড়ে চার সে.মি নিচে পদ্মার পানি


এম এ আমিন রিংকু :

ধীরে ধীরে ফুলেফেঁপে উঠছে পদ্মা। প্রতিদিনই বাড়ছে পানি। উজান থেকে আসছে স্রোত। ফলে ডুবে গেছে চর। ঢেউ এখন আছড়ে পড়ছে রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধের হার্ডপয়েন্টে টি’ বাঁধের তলায়। বিকেল ৩ টায় বিপদসীমার সাড়ে চার সেন্টিমিটারের নিচেই ছিল পানি। তবে এ নিয়ে আপাতত শঙ্কার কিছু নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন  বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুখলেসুর রহমান জানান,  মূলত বৃষ্টির কারণেই পদ্মায় পানি বাড়তে শুরু করেছে।সাধারণত অক্টোবর পর্যন্ত  পানি বাড়তে থাকে। গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহী পয়েন্টে পানির উচ্চত্ ছিল সর্বোচ্চ ১৭ দশমিক ৫১ সেন্টিমিটার। তবে বিপদসীমা ধরা হয় ১৮ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার।  এখন পানি বাড়াকে স্বাভাবিক প্রবাহ হিসেবেই দেখছেন তিনি।

এদিকে, জুন মাসের শুরু থেকেই পদ্মায় পানি বাড়তে শুরু করেছে বলে জানিছেন রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডে গেজ রিডার এনামুল হক। তিনি ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে বলেন,  শনিবার দুপুর ১২টায় ১৩ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার উচ্চতায় পানির প্রবাহ ছিল। বিকেল ৩টায়   বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৮৪ সেন্টিমিটারে। প্রতি তিন ঘণ্টা পর পর পানির উচ্চতা মাপা হয়। প্রতিদিনের পানির প্রবাহ রেকর্ড রাখা হচ্ছে।

তবে পানি নিয়ে এখনো উদ্বেগের কিছু নেই বলেও জানান তিনি। কারণ,  গেল ১৭ বছরে রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে মাত্র দু’বার। এর মধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা ৮ বছর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। কেবল ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার।

এরপর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মা বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল। ওই বছর পদ্মার উচ্চতা দাঁড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। এর পর আর এই রেকর্ড ভাঙেনি।

এদিকে পদ্মায় পানি বাড়তে থাকায় আশা জেগেছে জেলেদের মাঝেও। এরইমধ্যে তারা মাছ শিকারের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। অনেকেই তৈরি করছেন বাঁশের চাঁই। কেউ বা বুনছেন জাল। ফলে ব্যস্ততা বেড়েছে জেলেপল্লীতে।

পদ্মাপাড়ের জেলে নওশের আলীর কণ্ঠে অবশ্য হতাশাই শোনা গেল। শনিবার দুপুরে নদীরপাড়ে বসে চাঁই তৈরি করতে করতে তিনি বলছিলেন, পদ্মায় আগের মতো মাছ মেলে না। পানির তোড়ও নেই। প্রায় দুই দশক ধরেই পদ্মা হারিয়েছে তার আসল রূপ। আগে রাতের বেলা পদ্মার গর্জনে ঘুম আসতো আতঙ্কে। এখন নেই পানি আর নেই। সারাদিন মাছ ধরেই সময় কাটতো জেলেদের। এখন সারাদিন নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ালেও মাছ তেমন পাওয়া যায় না।

আরও পড়তে পারেন মোবাইল চোরের ছুরিকাঘাতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী খুন


শর্টলিংকঃ