Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

রাজশাহীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ভেঙে এনজিও’র কিস্তি আদায়


নিজস্ব প্রতিবেদক :

করোনায়  উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাজশাহীতে ঋণের কিস্তি আদায় অব্যাহত রেখেছে কয়েকটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)। মঙ্গলবার সকাল থেকে নগরী এবং গ্রাম পর্যায়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনজিও’র মাঠকর্মীরা জোর-জবরদদস্তি করে কিস্তির টাকা আদায় করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশের অন্যান্য জেলার মতো রাজশাহী জেলা প্রশাসনও বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিওগুলোকে কিস্তির টাকা আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়। সোমবার (২৩ মার্চ) জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা সম্বলিত চিঠিও পাঠানো হয়। রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়- ‘আগামী ৩০ এপ্রিল ২০২০ তারিখ পর্যন্ত রাজশাহী জেলার সকল ব্যাংক ও এনজিওগুলোর ক্ষুদ্র ঋণগ্রহীতাদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হলো’।

তবে প্রশাসনের ঘোষণার পরদিন মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার, মাস্টারপাড়া কাঁচাবাজার, কাপড়পট্টি, জামাল সুপার মার্কেট এবং গ্রাম পর্যায়ে কিস্তি আদায়ে ঠিকই মাঠে নামে ‘দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক’, ‘উত্তরা ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম সোসাইটি’সহ বেশ কয়েকটি এনজিও প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এসময়  কিস্তি স্থগিতাদেশের কথা গ্রাহকরা বললে এনজিও কর্মীরা বাক-বিতন্ডায়ও জড়িয়ে পড়েন।

নগরীর সেঞ্চুরি সুপার মার্কেটের ‘জোহরা ম্যাচিং’ এর মালিক মো. ওলিউজ্জামান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে কিছুদিন যাবত দোকানে কোনো বেচাবিক্রি নেই। গতকাল (সোমবার, ২৩ মার্চ) শুনলাম কিস্তি আদায় বন্ধ। অথচ সকালে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের লোকজন কিস্তি নিতে এসেছেন। সরকার কিস্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে- বিষয়টি জানালেও তিনি জোর করেই টাকা নিয়ে গেছেন।’

উত্তরা ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের ঋণগ্রহীতা মাহমুদা জান্নাত বলেন, ‘সরকার বলার পরও তারা টাকা আদায় করছে। টাকা না দিলে ঝামেলা বাধবে, মানুষ খারাপ বলবে। তাই বেশি কথা না বাড়িয়ে যা টাকা ছিল দিয়ে দিয়েছি। আয়-রোজগার নেই, দেশের যা পরিস্থিতি চাল-ডাল কিনে রাখার টাকাটাও থাকলো না।’

জানতে চাইলে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের রাজশাহী শাখার ব্যবস্থাপক এসএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা পেয়েছি। তবে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও নির্দেশ ছাড়া তো আমরা কিস্তি আদায় বন্ধ করতে পারি না। তবে আমরা কারও থেকে জোর করে কিস্তির টাকা নিই নি। যারা স্বেচ্ছায় দিচ্ছে, তাদের কাছ থেকেই নিচ্ছি।’

তবে উত্তরা ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের রাজশাহীর বোয়ালিয়া শাখার ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের অফিসে কেউ আসেও নাই, আমরা কিস্তি আদায় বন্ধও করি নাই’।

এদিকে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, ‘এনজিওগুলোকে চিঠি দিয়ে এরই মধ্যে কিস্তি আদায় বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমেও বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। তারপরও যারা একগুঁয়েমি করে কিস্তি আদায় অব্যাহত রেখেছেন, তাদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।


Exit mobile version