রাজশাহীর তানোর: এককালে এখানে পাকা রাস্তা ছিল!


তানোর প্রতিনিধি:

তানোর উপজেলার গ্রামীন রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার (মেরামত) না করায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে কৃষকরা তাদের কৃষি পন্য সময়মত আনা-নেয়া করতে পারছেন না। রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার করায় ফলে জনসাধারনের মধ্যে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চিত্র ফিকে হয়ে যাচ্ছে। 

তানোর উপজেলার গ্রামীন রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার (মেরামত) না করায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে
তানোর উপজেলার গ্রামীন রাস্তাগুলো দীর্ঘদিন সংস্কার (মেরামত) না করায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে

তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন আগে রাস্তাগুলো পাকা করা হলেও কোন সংস্কার না করায় রাস্তার পিচ উঠে ছোট বড় গর্ত হওয়ার পাশাপাশি দু’ধারের পাটি সরে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। আবার কিছু কিছু রাস্তার পুরোটাই ভেঙ্গে মাঠির রাস্তায় পরিনত হয়েছে, দেখলে মনে হবে এই রাস্তাটি পাকা ছিলোনা। যা দেখার যেন কেউ নেই।

ভাঙ্গা রাস্তাগুলোর মধ্যে অন্যতম ভাঙ্গা রাস্তা হচ্ছে, তানোর-আমনুরা সড়কের মুন্ডমালা বাজার থেকে আমনুরা পর্যন্ত সড়কের তানোর সীমানা ধামধুম ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাটিও একেবারেই ভেঙ্গে যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এই রাস্তাটির প্রায় পুরো রাস্তার দু’ধার ও মাঝের পিচ উঠে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গুরুত্বপূর্ন এই রাস্তা দিয়ে যান-বাহন চলাচলে বিড়াম্বনার পাশাপাশি চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বাস, অটো, ভুটভুটি, মটরসাইকেলসহ সকল যান-বাহনের যাত্রীদের।

সরনজাই বাজার থেকে শুরু হয়ে শুকদেবপুর মোহর হয়ে দেবিপুর পর্যন্ত এবং দেবিপুর মোড় থেকে শুরু হয়ে লালপুর হয়ে সালামপুর ও নারায়নপুর হয়ে ইলামদহি হাট পর্যন্ত এবং ইলামদহি হাট থেকে শুরু কলে দুবইল হয়ে প্রকাশনগর পর্যন্ত, ইলামদহি হাট থেকে চানপুর হয়ে বানিয়াল হয়ে বোনকেশর পর্যন্ত, দর্গাডাঙ্গা থেকে নড়িয়াল পর্যন্ত রাস্তা গুলোর পুরোটাই ভেঙ্গে মাটির রাস্তায় পরিনত হয়েছে, কোথাও কোথাও অল্প সামান্য পিচ দেখা গেলেও একে বারেই ভাঙ্গাচুরা রাস্তা দিয়ে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান, গম, আলুসহ কৃষি পন্য আনা নেয়া করতে চরম বিড়াম্বনা ও কষ্টের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

তানোর থানা মোড়ের বাস মাষ্টার মমিনুল ইসলাম মুকুল বলেন, দীর্ঘদিন থেকে গুরুত্বপূর্ন এই রাস্তাটি ভাঙ্গা অবস্থায় রয়েছে, সংস্কার (মেরামত) না করায় বাস-ট্রাকসহ যান-বাহন প্রায় দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে, এবং সময় বেশী লাগছে, মুন্ডমালা থেকে আমনুরা সড়কের ধামধুম পর্যন্ত রাস্তাটি দ্রুত স্থায়ী ভাবে সংস্কার (মেরামত) করা বিশেষ প্রয়োজন।

সরনজাই ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সেলিম রেজা বলেন, সরনজাই থেকে দেবিপুর পর্যন্ত রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপুর্ন রাস্তা, দীর্ঘদিন থেকে সংষ্কার না করায় এ অঞ্চলের কৃষকরা কৃষি পন্য সময়মত আনা নেয়া করতে পারছেন না, ফলে কৃষকরা তাদের কৃষি পন্যের ন্যায্য মুল্যও পাচ্ছেন না, আমরা যারা রাজনীতির সাথে জড়িত তাদেরকে এই রাস্তার জন্য কৃষকসহ জরসাধারনের বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মখীন হচ্ছি, যা বর্তমান সরকার ও স্থানীয় সংসদ সদস্য’র ভামুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

তিনি বলেন দীর্ঘদিন থেকে শুনে আসছি এই রাস্তাটি সংস্কার হবে কিন্তু তা না হওয়ায় এ অঞ্চলের জনসাধারনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই রাস্তাটি সংস্কার করা খুবই জরুরী। তানোর উপজেলার আদর্শ কৃষক নুর মোহাম্মদ বলেন, কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পন্যের ন্যায্য মুল্য পাওয়া নিশ্চত করতে গ্রামীন রাস্তাগুলো সংস্কার করা প্রয়োজন, যোগাযোগ ব্যবস্থার কারনে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পন্যের ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হয়। মোহর গ্রামের সৈয়দ আলী নামের কৃষক বলেন, রাস্তাগুলো সংস্কার না করায় ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে ভ্যান ভুটভুটি সময়মত পাওয়া যায়না, পাওয়া গেলেও কৃষি পন্য এই রাস্তা দিয়ে আনা নেয়া করতে খরচ বেশী পড়ছে। উৎপাদিত ধান, গম, আলু আনা নেয়া করতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

এব্যাপারে তানোর উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তানোর উপজেলার ভাঙ্গা রাস্তাগুলো সংস্কারের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, অল্প দিনের মধ্যেই তানোর উপজেলার সকল ভাঙ্গা রাস্তা সংস্কার শুরু করা হবে।

তানোর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ ওমর ফারুক চৌধুরীূর নির্দেশে তানোর উপজেলার সকল ভাঙ্গা রাস্তার তালিকা ও প্রকল্প করে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে, দ্রুত সংস্কার করার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আগামীতে তানোর উপজেলায় কোন রাস্তা ভাঙ্গা থাকবেনা সে ব্যবস্থা ও পরিকল্পনা গ্রহন করা হচ্ছে।


শর্টলিংকঃ