রাজশাহীর পদ্মা পাড়ে ত্রানের জন্য হাহাকার


আমানুল হক আমান, বাঘা:
রাজশাহীতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পদ্মা নদীর পাড়ে বসবাসকারীরা ত্রানের জন্য আর্তনাদ করছেন। ইতিমধ্যেই সিটি মেয়র পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ত্রান বিতরণ করলেও এ ওয়ার্ডের কেশবপুর বুলোনপুর, ঘোষপাড়া এলাকার মানুষ এখন পর্যন্ত কোন ত্রান না পেয়ে আর্তনাদ করছেন। এ দিকে জিও ব্যাগ (বালুর বস্তা) ফেলে দেবে যাওয়া বাধ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।


জানা যায়, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কেশবপুর, বুলোনপুর, ঘোষপাড়া এলাকার পদ্মা নদীর ধারে প্রায় এক হাজার পরিবার রয়েছে। বাধের কোন কোন জায়গায় দেবে গিয়ে কিছু বাড়িতে পানি ডুকেছে। এতে প্রায় ২০ থেকে ২৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এলাকারবাসীর অভিযোগ সিটি মেয়র বন্যায় কবলিত বিভিন্ন পয়েন্টে ত্রান দিয়ে সহযোগিতা কররেও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কোন সহযোগিতা করা হয়নি। তবে জিও ব্যাগ (বালুর বস্তা) ফেলে দেবে যাওয়া বাধ রক্ষা করার চেষ্টা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এ বিষয়ে পদ্মার ধারে পুলিশ লাইনের কেশবপুর বটতলার তোতা মিয়া বলেন, আমি এ বটতলায় ১৯৯৬ সাল থেকে মুদিখানার দোকান দিয়ে ব্যবসা করে আসছি। বিভিন্ন সময় ক্ষতিগ্রস্থদের সিটি কর্পোরেশন থেকে সহায়তা দেয়া হয়। কিন্তু আমরা কেশবপুর এলাকার মানুষ কোন দিন সহায়তা পায়নি। বাধ কোন কোন জায়গায় দেবে গেছে। পানি বাড়ির সামনে এসেছে, যে কোন সময় বাধ ভেঙ্গে যাবে। এছাড়া কারো কারো বাড়ির মধ্যে পানি ডুকেছে। রাতে ঘুম হয় না। বর্তমানে ছেলে-মেয়ে নিয়ে আতংকে আছি।

কেশবপুর এলাকার ঝর্ণা বেগম বলেন, আমার বাড়ির সামনে বাধ দেবে গেছে। অন্য জায়গায় (জিও ব্যাগ) বালুর বস্তা ফেলা হলেও, আমার বাড়ির সামনে বস্তা দেয়া হচ্ছেনা। আমি বিভিন্ন লোককে বলেও কাজ করছে না। এছাড়া সরকারিভাবেও কোন ত্রানও দেয়া হয়নি।

একই এলাকার রাবিয়া বেগম বলেন, দুটি সন্তান রেখে স্বামী মারা গেছে। অন্যের বাড়িতে কাজ করে খায়। আমার বাড়িতে বন্যার পানি ডুকেছে। শুনেছি মেয়র অন্য জায়গায় ত্রান দিয়ে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু আমাদের এলাকায় কোন ত্রান দেয়া হয়নি।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রুহুল আমি টুলু বলেন, আমার ওয়ার্ডে পদ্মা নদীর ধার দিয়ে প্রায় ১ হাজার পরিবার রয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ২০ থেকে ২৫টি পরিবার। এ বিষয়ে আমি মেয়রকে তালিকা দিয়েছি। বরাদ্দ পেলে তাৎক্ষনিক দেয়া হবে। এ দিকে জিও ব্যাগ (বালুর বস্তা) ফেলে দেবে যাওয়া বাধ রক্ষার চেষ্টা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল আলম বলেন, বাঁধটি স্রোতের মুখে পড়ে কিছু কিছু জায়গায় দেবে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বাঁধ রক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই দেবে যাওয়া বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় আড়াই হাজার বস্তা জিও ব্যাগ (বালুর বস্তা) ফেলা হয়েছে। আর যেন কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে ব্যাপারে কাজ করা হচ্ছে। তবে শনিবার সকাল ৯টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ১৫ মিটার।


শর্টলিংকঃ