রাজশাহী পলিটেকনিকে ছাত্রলীগের টর্চার সেল


নিজস্ব প্রতিবেদক :

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের১১১৯ নম্বর কক্ষটি টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতো শাখা ছাত্রলীগ। তবে এত দিনে ঘুনাক্ষরে বিষয়টি জানা যায়নি বলছে কর্তৃপক্ষ। ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের ঘটনার পর রোববার (০৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসলে বিষয়টি সামনে আসে। ওই কক্ষ আজ দেশী অস্ত্র যেমন- লোহার রড, পাত ও পাইপ পাওয়া গেছে।

ছবি: রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের টর্চার সেল

 

অধ্যক্ষকে তুলে নিয়ে গিয়ে পুকুরের ফেলে দেওয়ার ঘটনায় তিন সদস্যের কমিটি করেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদর। রোববার এ কমিটি গঠন করা হয়। সন্ধ্যায় কমিটির তিন সদস্য রাজশাহী পৌঁছে তদন্ত শুরু করেন। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সিসিটিভির ফুটেজ দেখেন।

এ সময় তদন্ত দল ক্যাম্পাসে একটি টর্চার সেলের সন্ধান পায়। পুকুরের পশ্চিম পাশের ভবনের ১১১৯ নম্বর কক্ষে এ টর্চার সেল থেকে লোহার রড, পাত ও পাইপ পাওয়া যায়। পরে সেগুলো পুলিশ হেফাজতে দেওয়া হয়। এ সময় তদন্ত কমিটির কাছে কয়েকজন শিক্ষক ও ছাত্র জানায়, ওই টর্চার সেলটি ছাত্রলীগের। ওই কক্ষের সামনে ছাত্রলীগের টেন্ট। ছাত্রলীগের নেতাদের কথা না শুনলে সেখানে নিয়ে গিয়ে টর্চার করা হতো।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের যুগ্ম সচিব ও পরিচালক (প্রশাসন) স্বাক্ষরিত তদন্ত কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের যুগ্ম সচিব ও পরিচালাক (পিআইডব্লিউ) এসএম ফেরদৌস আলমকে। এছাড়াও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালাক (কারিকুলাম) ড. মো. নুরুল ইসলাম কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী মহিলা পলিকেনিটক ইনিস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওমর ফারুককে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির আহবায়ক এসএম ফেরদৌস আলম বলেন, সকালে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বিকেলে তারা দুইজন ঢাকা থেকে বিমানে রাজশাহী যান। কমিটির অপর সদস্য রাজশাহীতে ছিলেন। রাজশাহী পৌঁছেই তারা তদন্ত শুরু করেছেন। তারা তদন্ত শেষে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলেও জানান।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে শাখা ছাত্রলীগের টর্চার সেল নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ফেরদৌস আলম বলেন, তারা তদন্ত শুরু করেছেন। অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এখনই তদন্তের সব কথা বলে দিলে তো তা আর তদন্ত থাকে না। তাই সব বিষয়গুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্তের পর প্রতিবেদন তৈরী করবেন। এর পরই তা প্রকাশ করা হবে বলেও জানান সরকারি তদন্ত কমিটির এই প্রধান।

এদিকে, রাজশাহী পলিটেনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দীন আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্যাম্পাসের ওই কক্ষটি জোর করে নিয়ে ছাত্রলীগের ছেলেরা ব্যবহার করতো। সেখানে বসে তারা বিভিন্ন সময় আড্ডা বা মিটিং-টিটিং করতো। কখনও শুনি নি তারা ওই কক্ষটি টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করতো। আর এ নিয়ে কেউ কোনদিন তার কাছে অভিযোগও দেয়নি। দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতাম।


শর্টলিংকঃ