রাজশাহী সীমান্তে চোরাচালান ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে বিজিবি


নিজস্ব প্রতিবেদক:

দেশীয় প্রাণিসম্পদ ও খামারিদের বাঁচাতে সীমান্ত পথে ভারতীয় গবাদিপশু চোরাচালান ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে বিজিবি। ঈদের আগে সীমান্ত পথে ভারতীয় গরু-মহিষ আনার ফলে প্রতি বছরই খামারিরা বিপুল আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েন। তাই এবার এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ভারতীয় গরু ঠেকাতে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে বিজিবি ।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহীস্থ-১ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরসৌস জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঈদের আগে ভারতীয় গরু মহিষ আসলে খামারি ও গবাদিপশু পালনকারী হাজার হাজার মানুষ গরু-মহিষের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হবেন। পাশাপাশি গরু আনতে বা নিতে গিয়ে সীমান্তে বিএসএফের গুলি ও নির্যাতনে নিরীহ রাখালদের প্রাণ যাচ্ছে।

গরু আনার সুযোগে ভারত থেকে অনেকেই মাদকের চালানও নিয়ে আসে। এ কারণে আমরা সীমান্তে চলাচল কঠোর করেছি। গরু-মহিষ চোরাচালানের কারণে সীমান্তে অধিকাংশ বিশৃঙ্খলা ঘটে। সীমান্তে বসবাসকারী মানুষদের সহায়তায় ভারতীয় গরু চোরাচালান বন্ধে রাজশাহীর সব সীমান্তের সব ধরণের উদ্যোগ নিয়েছে বিজিবি।

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাজশাহীসহ উত্তর-দক্ষিণাঞ্চল সীমান্তে ভারতীয় গরু-মহিষ আনার জন্য বিট খাটাল অনুমোদন দিয়ে থাকেন। তবে দেশীয় প্রাণিসম্পদ বিকাশের স্বার্থে বছরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে সীমান্তে কোনো বিট খাটাল অনুমোদন না দেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এই নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকরের জন্য রাজশাহী ও রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার ছাড়াও উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের সবল জেলা প্রশাসককে চিঠি দেয়া হয়।

ফলে চলতি বছরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্তে কোনো বিট খাটালের অনুমোদন দেয়নি। ফলে গত ৬ মাসে দেশের অধিকাংশ সীমান্ত পথে ভারতীয় গরু-মহিষের চোরাচালানও বন্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছে বিজিবি।

রাজশাহী সীমান্তের চরখিদিরপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, রাজশাহীর বিস্তীর্ণ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নেই। এখন পদ্মায় পানি ভরেছে।এই সুযোগে চোরাচালান সিন্ডিকেট নদীপথে ভারত থেকে গরু মহিষ আনার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে ঈদের আগে ভারতীয় গরু মহিষ আনার ফলে দেশি গরু মহিষের দাম পাওয়া যায় না। এ কারণে তারা রাত জেগে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছেন বিজিবির সঙ্গে থেকে। তারা কোনভাবেই ভারতীয় গরু মহিষ ঢুকতে দেবেন না।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর প্রতিটি সীমান্তে বিজিবি স্থানীয়দের নিয়ে ১৬ সদস্যের চোরাচালান প্রতিরোধ ও সীমান্ত পাহারা কমিটি করে দিয়েছে। তারাই ঈদের আগের দিন পর্যন্ত লাগাতার সীমান্ত পাহারায় বিজিবিকে সহযোগীতা করবে। ভারতীয় গরু চোরাচালান ঠেকাতে তারা যে কোনো মূল্যে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর খানপুর সীমান্তের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম।


শর্টলিংকঃ