জিয়াউল গনি সেলিম/এম এ আমিন,সীমান্ত থেকে ফিরে :
রাজশাহীর পদ্মা নদী হতে পাঁচ জেলেকে বিএসএফের অপহরণ ঘটনার পর রাজশাহী সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিজিবি। বিশেষ করে সোনাইকান্দি বিওপির অধীনে খোলাবোনা পয়েন্টে পদ্মার ওপারে টহল বাড়িয়েছে বিজিবি।
পাঁচ জেলে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা সুরাহা হয় নি এক সপ্তাহেও। উল্টো ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ প্রোটেস্ট নোট পাঠিয়ে বিজিবিকে বলেছে, অনুপ্রবেশের অভিযোগে তাদের আটক করে মুর্শিদাবাদ পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। এ অবস্থায় বিজিবি-বিএসএফ’র মধ্যে উচ্চপর্যায়ের পতাকা বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।
গত ৩১ জানুয়ারি রাজশাহীর সোনাইকান্দি সীমান্তে অনুপ্রবেশ করে পদ্মা নদী থেকে পাঁচ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে বিএসএফ। এরপর রেওয়াজ অনুযায়ী পতাকা বৈঠক হলেও তাদের মুক্তি দেয়া হয় নি। বরং ভারতীয় ভূ-খণ্ডে অনুপ্রবেশের অভিযোগ সাজিয়ে সেদেশের পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে তাদের। এ ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বিএসএফকে চিঠি দেয় বিজিবি। কিন্তু পাল্টা প্রতিবাদ চিঠি পাঠিয়ে ঘটনার স্থান অস্বীকার করে বিএসএফ দাবি করেছে আটককৃতরা জেলে নয়, গরুর রাখাল। এরপরই ওই সীমান্তে সতর্কাবস্থায় রয়েছে বিজিবি।
বিজিবির ১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে জানান, আগামী ১০ফেব্রুয়ারি বিজিবি ও বিএসএফের সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে জেলেদের অপহরণ ও সীমান্ত রেখা নির্ধারণ বিষয়ে আলোচনা হবে। কারণ, নদী হওয়ায় ওই এলাকায় সীমান্ত পিলার নেই। তবে আমরা আমিন এনে সরেজমিনে মেপে দেখেছি, সীমান্ত হতে প্রায় এক কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বিএসএফ সদস্যরা পদ্মা নদী থেকে ৫জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। কাজেই বিএসএফ’র অভিযোগ সত্য নয়।
এ বিষয়ে বেসরকারী গবেষণা সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন’র রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি আহমদ সফিউদ্দিন বলছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এখন অনন্য উচ্চতায়। এরপরও সীমান্তে যেভাবে বাড়াবাড়ির ঘটনা ঘটছে, তার সমাধান খোঁজা জরুরি।
এদিকে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ায় ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. প্রণব কুমার পাণ্ডে বলেছেন, বাংলাদেশ বা ভারত সরকার নিশ্চয়ই এ ধরনের ঘটনা সমর্থন করে না। কিন্তু যারা সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন তারা এর দায় এড়াতে পারে না। কাজেই এ অবস্থায় এখনই দুই দেশকে বৈঠকে বসা দরকার।
পদ্মা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেরা হলেন-রাজন হোসেন, নুরুজ্জামান দোয়েল, কাবিল হোসেন, শাহীন আলী ও শফিকুল ইসলাম । তাদের বাড়ি পবা উপজেলার গহমাবোনা এলাকায়।
ঘটনা প্রবাহ
পদ্মায় ৫ জেলে অপহরণের ঘটনাস্থলই অস্বীকার বিএসএফ’র!
বিএসএফের হাতে অপহৃত স্বামী-সন্তানের মুক্তির আকুতি পরিবারের
দু’দফা বৈঠকের পরও পাঁচ জেলেকে ফেরত দেয় নি বিএসএফ
পতাকা বৈঠকের সময় দিয়েও হাজির হয়নি বিএসএফ
রাজশাহী সীমান্ত থেকে পাঁচ বাংলাদেশীকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ