রাণীনগরে জীবিত গাছকে মরা দেখিয়ে নিলামে বিক্রি!


নিজস্ব প্রতিবেদক:

করোনা আতংক পরিস্থিতির মধ্যেই তড়িঘড়ি করে নামমাত্র মূল্যে ৯টি জীবিত গাছকে ঝড়ে পড়া ও মরা দেখিয়ে নিলামে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে। নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ সম্প্রসারণের অজুহাতে ওই জীবিত গাছগুলোকে নিলামে তোলার ঘটনায় বিভিন্ন মহলে সমালোচনা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে,গাছগুলোর নিলামের নথিপত্রে ঝড়ে পড়া ও মরা গাছ দেখানো হলেও খোদ ইউএনও ইজারা গ্রহীতার সঙ্গে যোগসাজসে নাম মাত্র মূল্যে জীবিত গাছগুলো কেটে নেওয়ার জন্য সন্ধি করেন। উপজেলা চত্বরে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ থেকে গাছ গুলোর দুরত্ব অনেক দুরে হওয়ার পরেও মসজিদ সম্প্রসারণের অজুহাতে কেন ওই গাছগুলি কাটা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ চত্বরের পশ্চিম দিকে অবস্থিত এই ৯টি গাছের মধ্যে ৮টি ইউকাল্পিটাস ও ১টি বড় পুরাতন রেইন্ট্রি কড়ইয়ের গাছ রয়েছে। গত ১১ মার্চ নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দপ্তর থেকে ওই জীবিত গাছ গুলোকে ঝড়ে পড়া ও মরা গাছ দেখিয়ে নিলামে বিক্রির বিজ্ঞপ্তি জারি করে।সেই মোতাবেক গত ২২ মার্চ ৪৬.৪৩.৬৪৮৫.০০৬.০৩৪.৩৪.২০-৩৩৭ নং স্মারকে ইজারা গ্রহীতা আব্দুস সালামকে কার্যাদেশ দিয়ে ৭দিনের মধ্যে গাছ কর্তনের নির্দেশ দেয়া হয়।

ইজারা গ্রহীতা আব্দুস সালাম ১লাখ টাকা মূল্যে ওই গাছগুলো ক্রয় করেছেন বলে দাবী করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইজারা গ্রহীতার পক্ষের লোকজন ক’দিনে উপজেলার পরিষদের অভ্যন্তরের জীবিত ৮টি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে ফেলে রেখেছে। ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ফলে,ছায়াবৃক্ষ ১টি রেইনট্রি গাছের ডালপালা কর্তন করা হলেও সমালোচনার মুখে গাছটি কাটা বন্ধ রাখা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকে বলেন,উপজেলা চত্বরে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা মরা কোন গাছ নেই তাই ইজারা গ্রহীতা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজস করে জীবিত গাছগুলি কেটেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আঁতাত করে নামকাওয়াস্তে টেন্ডার দিয়ে উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত বিশালাকারের সবুজ ৯টি ছায়াবৃক্ষ কেটেছেন।

তারা বলেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে রাণীনগরে গাছপালা ভেঙ্গে যাওয়ার মতো কোন ঝড় হয়নি এবং উপজেলা পরিষদ চত্বরে কোন গাছ ঝড়েও ভাঙ্গেনি, মরেও যায়নি। মাঝখান থেকে বিভিন্ন সময় গাছগুলির নিচে বসে যে বিশ্রাম নিতাম এখন থেকে সে জায়গাটুকুও রইলোনা। অভিযোগ রয়েছে,গাছগুলো বিক্রির জন্য কবে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে বা কিভাবে কত টাকা মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে তা গাছ বিক্রয় কমিটির অনেক সদস্যই জানেন না।

নিলাম কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী শাইদুর রহমান মিঞা বলেন, নির্বাহী কর্মকর্তা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নিলাম করেছে বিস্তারিত জানতে চাইলে নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। গাছ বিক্রয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন, উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে নিলাম করা হয়েছে। এর বেশি কিছু জানাতে অনিহা প্রকাশ করেন।


শর্টলিংকঃ