রাণীনগরে স্কুল ছাত্রীকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার ৩


রানীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : 

নওগাঁর রাণীনগরে আবু বক্কর নামে এক দিন মজুর লম্পটের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ৯ম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রীর বাড়িতে ভাড়াটিয়া বাহিনী দিয়ে দফায় দফায় হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ তুলেছেন নিহত ফাইমার (১৪) পরিবার।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। মমূর্ষ ফাইমাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় নিগত ফাইমার মা বেবি আক্তার বাদী হয়ে আবু বক্করসহ এজাহারনামীয় ১৯ জন এবং আরো ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে সোমবার দুপুরে মামলা দায়ের করলে পুলিশ এজাহার নামীয় তিন জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।

জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত-আহাদ আলির ছেলে আবু বক্কর দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবেশি হাতেম আলির নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ফাইমাকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায় উত্ত্যক্ত করতো। এনিয়ে এক বছর আগে পারিবারিক ভাবে বৈঠকের মাধ্যমে নিষেধ করা হয় বক্করকে। তারপরেও কোন ভাবেই ফাইমার পিছু ছাড়ে না লম্পট আবু বক্কর ।

এমনকি ফাইমার সাথে কথা বলতে নিষেধ করায় আবু বক্কর ফাইমাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিবে বলে হুমকি-ধামকিও দিয়ে আসতো। এর ধারাবাহিকতায় গত রবিবার সন্ধ্যায় আবারও ফাইমাকে কু-প্রস্তাব দিলে সে তার পরিবারকে জানিয়ে দেয়।

এসময় নিহতের পরিবার প্রতিবাদ করলে আবু বক্কর পাশের গ্রাম থেকে ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে এসে নিহতের পরিবারের উপর দুই দফা হামলা চালালে নিহতের মামা আব্দুল মজিদসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। আহতদের নিয়ে চিকিৎসার জন্য রাণীনগর হাসপাতালে গেলে তৃতীয় বারের মত আবারও হামলা চালায় বক্কর ও তার বাহিনী।

নিহতের মামী ছালমা জানান, তৃতীয় দফায় বাড়িতে কোন পুরুষ মানুষ না থাকার সুযোগে আবু বক্কর ও তার ভাড়াটিয়া বাহিনীর সদস্যরা স্কুল ছাত্রী ফাইমাকে মারপিট করে মেরে ফেলে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রেখে যায় বলে আমরা ধারনা করছি। পরে ফাইমাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় রাণীনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার প্রেক্ষিতে থানাপুলিশ বাহাদুরপুর গ্রামের শহিদুলের ছেলে সম্রাট (২০), একই গ্রামের গফুরের ছেলে মোসাদ্দেক (৩০) ও পাশের সদর উপজেলার চন্ডিপুরগ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে ইমনকে (২০) গ্রেফতার করে সোমবার বিকেলে আদালতে সোর্পদ করা করেছে। প্রধান আসামী আবু বক্কর এখনও পলাতক রয়েছে।

রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল হক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষনা করেন এবং সদর হাসপাতাল থেকেই লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রেক্ষিতে ৩জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। প্রধান আসামী আবু বক্কর পলাতক থাকায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত তাকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।


শর্টলিংকঃ