রাবিতেও একুশের ব্যানারে বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি!


নিজস্ব প্রতিবেদক:

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ব্যানারে ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের পরিবর্তে মহান একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাত বীরশ্রেষ্ঠ’র ছবি ব্যবহার করায় সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ। মুক্তিযোদ্ধা, ইতিহাসবিদ ও প্রগতিশীল শিক্ষকরা বলছেন, দেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের ভুল অমার্জনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এর মাধ্যমে ভাষা শহীদদের অসম্মান করা হয়েছে।

রাবির সংগীত বিভাগের বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক দীনবন্ধু পাল বলেন, সকল শহীদদের স্মরণ করে এ ধরনের ব্যানার তৈরি করা হয়েছে। এখানে মুজিববর্ষের চেতনাকেও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সময় স্বল্পতার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। এখানে কাউকে ছোট কিংবা বড় করা হয়নি।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে বিভাগের সামনে থেকে র‌্যালি নিয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর বিভাগের সামনে র‌্যালি শেষ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক সরকার সুজিত কুমার বলেন, ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত যাই হোক, এ ধরনের ভুল অমার্জনীয়। এর মাধ্যমে ভাষা শহীদদের প্রতি অসম্মান জানানো হয়েছে।

নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমান রাজু মনে করেন, ভাষা শহীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বীরশ্রেষ্ঠ সবাই আমাদের কাছে সম্মানীয়। কিন্তু সবাই আলাদা আলাদা প্রেক্ষাপটে ও স্বতন্ত্রভাবে সম্মানীয়। সেক্ষেত্রে ভাষা দিবসের ব্যানারে বীরশ্রেষ্ঠদের ছবি অনাকাঙ্ক্ষিত। এতে নতুন প্রজন্মের কাছে ভুল বার্তা যাবে। তারা ভাষাসৈনিক ও বীরশ্রেষ্ঠদের এক করে ফেলতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাশেম বলছেন, এটি যদি সায়েন্স ফ্যাকাল্টির ভুল হতো তবে মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু আদি মানবিকের একটি শাখা সংগীত বিভাগের এ ধরনের ভুল অমার্জনীয়। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টি মাত্র জানতে পেরেছি। বিভাগের সভাপতি সঙ্গে কথা বলবো। তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)-এর ব্যানারের একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেখানেও ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের পরিবর্তে মহান একাত্তরের শহীদ সাত বীরশ্রেষ্ঠর ছবি ব্যবহার করা হয়েছে


শর্টলিংকঃ