রাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৭


রাবি প্রতিনিধি:
আবাসিক হলের অতিথি কক্ষে বসা নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কমপক্ষে সাত জন আহত হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ্ হলে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।

মারধরের শিকার, অমিত হাসান লিমন, মারুফ, সোহেল, রশিদ, রিয়ন, রনি, জসীম। এদের মধ্যে অমিত হাসান লিমনের কপালে গুরুতর জখম হয়েছে। মারধরের শিকার সবাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গত কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারী।

অন্যদিকে মারধরকারীরা হলেন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত, আরিফ বিন জহির, মিজানুর রহমান সিনহা, সাংগঠনিক সম্পাদক চঞ্জল কুমার অর্ক, ছাত্রলীগ কর্মী সুব্রত, কামরুল। এরা সবাই বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুক্রবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে মাদার বখ্শ হলের গেস্ট রুমে ছাত্রলীগ কর্মীরা কামরুল ও অন্য আরেকজন শুয়ে ছিলো। তারা বর্তমান গোলাম কিবরিয়া ও ফয়সাল আহমেদ রুনুর কমিটির কর্মী।এ সময় বর্তমান কমিটির প্রতিদ্বন্দী ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান বাকি‘র অনুসারী লিমন সেখানে যায়। এবং বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে দেখে সে এবং তার তিন বান্ধবী গেস্ট রুমে বসতে চাইলে কামরুলের সাথে বাকবিতন্ডা হয়।

একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে লিমনের চোখের ওপরে, গলায় কেটে যায়। পরে এ ঘটনা শুনে ছাত্রলীগ নেতা বাকি‘র অনুসারী অন্য নেতাকমর্ীরা কামরুলের ২১৭ নম্বর কক্ষে যায়। কামরুল কক্ষের বাইরে না আসলে একটি জানালার কাচ ভাঙচুর করে তারা চলে যায়।

এর প্রায় আধাঘন্টা পরে বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা মাদার বখশ্ হলের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হতে থাকে। সেখানে বাকি অনুসারী কয়েকজন নেতাকর্মীরাও ছিলো। ওই সময় তাদের ওপর আকস্মিক হামলা চালায় বর্তমান কমিটির নেতাকর্মী। এতে চার জন নেতাকর্মী আহত হয়।

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল হাসান বাকি অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা বিগত রাবি শাখা ছাত্রলীগ কমিটিতে প্রার্থী ছিলাম। তবে যে কারণেই হোক আমরা পদ পায়নি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের কর্মকান্ড ধুলসাৎ করার জন্য এবং হল থেকে বের করে দেওয়ার জন্য তারা হামলা চালিয়েছে পরিকল্পিতভাবে। এতে আমাদের কয়জন আহতও হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়টি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র লিটনকে জানিয়েছি। সামনে ছাত্রলীগের সম্মেলন এজন্যই অপেক্ষা করছি। এছাড়াও আগামী পরশু দিন রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রী আসবেন।  তাই আমরা কোনো ধরণের সংঘর্ষে যেতে চাইনা।’

রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘হলের গেস্ট রুমে আমাদের এক করবে কর্মী কামরুলের সাথে ঝামেলা হয়। পরে আমাদের ওই কর্মী চলে গেলে তারা দলবল নিয়ে রুমে ভাঙচুর করে। এবং কামরুলকে খুন করবে বলে হুমকি দেয়। তবে তিনি থাকা অবস্থায় দলীয় কর্মীরা কোনো ধরণের হামলা চালায়নি বলে জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি আসার আগে দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হতে পারে। তবে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি এবং হল প্রধ্যক্ষ তদন্ত করে দেখবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। আমরা চাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে কোনো ঝামেলা সৃষ্টি হোক।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদার বখশ্ হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল আলিম বলেন, ‘আমি জরুরি কাজে ঢাকা এসেছি। তবে ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে প্রক্টরকে এবং হলের আবাসিক শিক্ষকদের জানিয়েছি। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘গেস্ট রুমে বসাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি, হল প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক নিয়ে এসেছি। এছাড়াও আমরা বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতাকমীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এখন আর কোনো ধরণের ঝামেলা নেই।’

ভিডিও দেখুন এখানে…

 


শর্টলিংকঃ