রাবির ৩ বিভাগের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ


রাবি প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) তিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভূগোল এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে রশিদ ছাড়াই টাকা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ কয়েকটি খাতে টাকা নেওয়া হচ্ছে জানা গেছে। তবে, কর্তপক্ষ বলছে টাকাগুলো বিভাগের উন্নয়নে ব্যবহার করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলা বিভাগের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য ৩ হাজার ৩০০ টাকা সোনালী ব্যাংকে জমা দিতে হচ্ছে। এছাড়াও আরও অতিরিক্ত ৫২০ টাকা অগ্রণী ব্যাংকে জমা দিতে হচ্ছে।

এরমধ্যে, বাংলা সমিতির জন্য ৮০০ টাকা, সাহিত্যিকী রিভিউ জার্নাল, সেমিনার লাইব্রেরির উন্নয়ন, বাংলা গবেষণা সংসদ ও মুক্তিযুদ্ধের কবিতা বই বাবদ ৩০০ টাকা, পরীক্ষা পরিচালনা ফি ও দরিদ্র তহবিল ফি বাবদ ২০০ টাকা, কম্পিউটার ল্যাব ফি ৪০০ এবং উন্নয়ন তহবিলের জন্য ৫০০ টাকা গুণতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশেষ করে বাংলা সমিতি ও মুক্তিযুদ্ধের কবিতা বইয়ের জন্য অপ্রয়োজনীয় টাকা নেয়া হচ্ছে। যার ফলে ফরম ফিলাপের জন্য বাড়তি চাপ পড়ছে। এছাড়াও বাংলা গবেষণা সংসদ রয়েছে তা আমাদের কোন প্রয়োজনে ব্যবহার হয় না। জোর করে বাধ্যতামূলক সাহিত্যকী জার্নালের জন্য আমাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়। যা পুরোপুরি অযৌক্তিক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক পিএম সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাহিত্যিকী জার্নাল শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী করবে। মুক্তিযুদ্ধের কবিতা এখন শিক্ষার্থীদের সিলেবাসভুক্ত। বিভাগের উন্নয়ন ও নানা আয়োজন-উৎসবের জন্য বাংলা সমিতির টাকা নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের টাকা শিক্ষার্থীদের কাছেই ফিরে যাচ্ছে।’

অন্যদিকে, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি কার্যক্রম চলছে। এ জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যাংকে ৩ হাজার ১২০ টাকা জমা দিতে হচ্ছে। এছাড়াও রশিদ ছাড়াই বিভাগের প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা করে নেয়া হয়েছে।

ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বিভাগে ভর্তির ফরম নেয়ার জন্য বিভাগে সাড়ে ৪ হাজার দিতে হচ্ছে। তবে কোন রশিদ দেওয়া হচ্ছে না। ফলে কোন খাতে টাকা নেওয়া হচ্ছে তা বুঝতে পারছেন না। এমনকি এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদেরও কিছু বলছেন না।

ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. রেজাউর রহমান বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে যে টাকা নেওয়া হয়, তা শিক্ষার্থীদের এবং বিভাগের উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে দেওয়া টাকায় তেমন কিছুই হয় না। আর বিভাগের সিদ্ধান্তেই রশিদ দেওয়া হয় না।’ এদিকে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তির সময় কোন রশিদ ছাড়াই ৬০০ টাকা নেয়া হয়েছে । শিক্ষার্থীরা বলছেন, এর জন্য শিক্ষার্থীদের কোনো রশিদ দেওয়া হয় না।

বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এসএম এক্রাম উল্যাহ বলেন, ‘টাকা জমার সমস্ত তথ্য বিভাগে জমা থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো রশিদ বই দেয় না। তাই আমরাও রশিদ দিই না।’ এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এমএ বারী বলেন, ‘টাকা যেখানেই, যে কারণেই নেওয়া হোক, অবশ্যই রশিদ দিতে হবে।’


শর্টলিংকঃ