রামেকে মরদেহের ময়নাতদন্ত করছে শিক্ষার্থীরাই


বিশেষ প্রতিবেদক :

মেডিকেল শিক্ষার্থীরা  অন্য বিভাগের মতো ফরেনসিকে ডিগ্রি নিয়ে  বাড়তি আয়ের সুযোগ-সুবিধা পান না। তাই এ বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করতে আগ্রহ নেই। ফলে নতুন নতুন শিক্ষক তৈরিতেও সংকট দেখা দিয়েছে।

শিক্ষক নেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে। তাই থমকে গেছে পড়ালেখা ও প্রশিক্ষণ। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষকের পদ খালি থাকায় ময়না তদন্তের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজও করানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের দিয়েই। ফলে বাধ্য হয়ে কলেজ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় মেডিকেল কর্তৃপক্ষ শিক্ষক চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছে। কিন্তু সাড়া দেয় নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সংকটের বোঝায় ডুবতে বসেছে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সবচে’ বড় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ। মেডিকেল শিক্ষায় অবিচ্ছেদ্য হলেও সবচে’ অবহেলিত এ বিভাগই। কয়েক বছর ধরে এখানে নেই কোনো অধ্যাপক। খালি হয়ে গেছে প্রভাষকের পদটিও। আর সহকারী ও সহযোগী অধ্যাপকের কোনো পদই নেই এখানে। ফরেনসিক বিভাগের শিক্ষার্থী ডা. মিজানুর রহমান জানান, শিক্ষক না থাকায় গেল পাঁচ বছরে ২৫জন ডিপ্লোমা অব ফরেনসিক মেডিসিন-ডিএফএম কোর্সে ভর্তি হলেও ১৪জনই শেষ না করেই চলে গেছেন। আর চলতি শিক্ষাবর্ষে অবিশষ্ট আছেন শুধু তিনিই।

শিক্ষকের অভাবে বিভাগটি অচল হয়ে পড়ায় মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষককে অধ্যাপক ডা. শাহ্ আলমকে আপাতত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ফরেনসিক বিভাগের। তিনি বলেন, নানা কারণে ফরেনসিক বিভাগে শিক্ষার্থীরা পড়তে আগ্রহী হচ্ছে না। এরমধ্যে অন্যতম কারণ হলো- পেশাগত কাজের সুবিধাজনক পরিবেশ না থাকা।  

এবিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজর অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলছেন, যেসব বিষয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের মাধ্যমে বাড়তি আয় করা যায় না, সেগুলোতে শিক্ষক বা বিশেষজ্ঞ হতেও আগ্রহী নন চিকিৎসকরা। এছাড়া ময়না তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়। তাই ফরেনসিক বিভাগের সংকট আরো জটিল হচ্ছে।  এ অবস্থায় বিপাকে পড়ে শিক্ষক চেয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠিও দিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, দেশে সরকারি ৩০টি মেডিকেল কলেজের মধ্যে ২৩টিতে চালু রয়েছে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ। এরমধ্যে কেবল রাজশাহী মেডিকেল কলেজে এ বিভাগের দু’বছর মেয়াদী ডিএফএম কোর্সে প্র্রতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি জন্য আসন রয়েছে ৫টি।

 


শর্টলিংকঃ