রাসিক’র বর্জ্যে হারিয়ে যাচ্ছে বারনই নদী


বিশেষ প্রতিবেদক:

রাজশাহী শহরের তরল বর্জ্যে মরতে বসেছে বারনই নদী। দূষণের কারণে নদীর তলদেশে ভরাট হয়ে গেছে। পানি নষ্ট হয়ে ধারণ করেছে কালো বর্ণ। এতে এখন মাছসহ জলজ প্রাণির অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। এমন ভয়াবহ নদী ‍দূষণের কারণে বিনোদনকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা আটকে আছে নওহাটা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের।অথচ এনিয়ে খুব একটা মাথাব্যথা নেই সিটি কর্পোরেশনের।

রাসিকের  বর্জ্যে ভরাট  হওয়া বারনই নদীর  অবস্থা এখন এ রকমই

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে,  শহরের প্রায় চার কোটি লিটার তরল বর্জ্য প্রতিদিন গিয়ে মিশছে পার্শ্ববর্তী বারনই নদীতে। এরমধ্যে ক্লিনিক্যাল বর্জ্য ছাড়াও রয়েছে বিসিক শিল্পনগরীর বিভিন্ন কল-কারখানার বর্জ্য।  বিভিন্ন এলাকায় ড্রেনের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ দেয়া হয়েছে বাসাবাড়ির মলমূত্রেরও।  এসব কিছুরই ভাগাড় যেন বারনই নদী। শহরের বর্জের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন নদীপাড়ের লক্ষাধিক মানুষ।

এভাবেই রাজশাহী শহরের আর্বজনা ও বর্জ্য গিয়ে মিশছে নদীতে

নওহাটা পৌর এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলছিলেন, এক সময় বারনই নদীতে স্টিমার চলতো। বড় বড় নৌকা চলাচল করতো। হাটে কেনাবেচা হতো ধান ও পাটসহ নানা ধরনের পণ্য। এসব পণ্যই মূলত যাতায়াত করতো এই নদীপথে। অথচ এখন দেখে বিশ্বাস করা কঠিন এটি এক সময় নদী ছিল। পানিশুন্য খালে পরিণত হয়েছে বারনই। জমিতে সেব দেবার পানিটুকুও মেলে না।

রাজশাহী বাণিজ্যিক মৎস্যচাষী সমিতির  সভাপতি সাদিকুল ইসলাম মেজো ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ ডট কম-কে জানান,  নদীপাড়ে জেলেপাড়া ছিল। সকাল হলেই তারা নদীতে মাছ ধরতো। সেই মাছই ছিল তাদের জীবিকার একমাত্র পথ। কিন্তু  দূষিত পানির কারণে বিষাক্ত হয়ে গেছে পানি। ফলে এখন আর মাছও নেই এতে।

 

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ভবন

সিটি কর্পোরেশনের এমন ‍দূষণের কারণে বারনইকে ঘিরে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা থমকে আছে বলে জানিয়েছে নওহাটা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী ও  ভারপ্রাপ্ত সচিব  আতাউর রহমান। তিনি বলেন, পানির দুর্গন্ধে নদীর পাশে টিকে থাকাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছেন।  এক সময়ের আর্শিবাদ হয়ে থাকা বারনই এখন সবার কাছেই অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে অবিলম্বে নদী দূষণরোধে সিটি কর্পোরেশনকে সতর্ক করে চিঠি দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে নদী ‍দূষণের কথা স্বীকার করে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক নগরীর দশটি নর্দমাকে ঘিরে  শিগগিরই বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে। এটি বাস্তবায়িত হলে এ সমস্যা আর থাকবে না।

 

 


শর্টলিংকঃ