রোহিঙ্গা হত্যায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাত সেনার আগাম মুক্তি!


সারাদুনিয়া ডেস্ক:

১০ রোহিঙ্গাকে হত্যার দায়ে কারাবন্দী সাত সেনাসদস্যকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমার। ২০১৭ সালে রাখাইনে সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞে ১০ মুসলিম রোহিঙ্গাকে হত্যার দায়ে কারাবন্দী করার এক বছরেরও কম সময়ে মুক্তি পেলো তারা। দুই কারা কর্মকর্তা, দুই সাবেক কারাবন্দী ও এক সেনা সদস্যের বরাত দিয়ে সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়।

রাখাইনের ইনদিন গ্রামে ১০ জন মুসলিম রোহিঙ্গা হত্যার ঘটনা উন্মোচনকারী রয়টার্সের দুই সাংবাদিকের চেয়েও কম সময় জেল খেটে পার পেয়ে গেলেন এ সাত সেনা সদস্য। অথচ মানবতাবিরোধী হত্যাকাণ্ডের প্রমাণসহ তথ্য সংগ্রহকারী দুই রয়টার্স সাংবাদিককে নজিরবিহীনভাবে ১৬ মাস কারাবন্দী রেখে চলতি মাসের ৬ তারিখ মুক্তি দেওয়া হয়।

সাজাপ্রাপ্ত সাত সেনাসদস্য গত কয়েক মাস ধরে কারাগারে নেই বলে নিশ্চিত করেন রাখাইনের সিত্তায়ে কারাগারের প্রধান প্রহরী ও একজন জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তা। নাম না প্রকাশের শর্তে নেপিদোর আরেক জ্যোষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, সাজাপ্রাপ্ত সেনাদের সাজা কমানো হয়েছে।

আনুমানিক কয়েক মাস আগে সাজাপ্রাপ্ত সেনাদের মুক্ত করা হয়েছে জানালেও তাদের মুক্তির সঠিক তারিখ তারা জানেন না, কেননা তা আনুষ্ঠানিকভাবে কোথাও ঘোষণা করা হয়নি।

এদিকে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জ মিন তুন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।

উল্লেখ্য, রাখাইনজুড়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানে নিষ্ঠুরতম হত্যাযজ্ঞ, গণধষর্ণ আর অগ্নিকাণ্ডের কারণেই ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এ অভিযানকে জাতিগত নিধন বলে আখ্যায়িত করে জাতিসংঘ।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়, রাখাইনে তেমন কোনো মানবতাবিরোধী ঘটনা ঘটেনি। গত এপ্রিলেই জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে দেশটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কিছু ক্ষেত্রে সেনাসদস্যরা অতি উৎসাহী হয়ে কিছু অপরাধ করেছে, যার জন্য তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়েছে ।

দেশটির সেনাপ্রধান বিশেষ করে ইনদিনের ঘটনাকে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘সর্বশেষ আমরা যে অপরাধের শাস্তি দিয়েছি, তা ছিল একটি হত্যাকাণ্ডের। সাতজন অপরাধীকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপরাধ করে থাকলে কখনোই তারা পার পাবে না।’

এছাড়াও দেশটির রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ও নেত্রী অং সান-সুচিও ইনদিনের হত্যাকাণ্ডে সাজার বিষয়টির কথা তুলে ধরে নাক উঁচিয়ে বলেছিলেন, ‘এটি হচ্ছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের দায়িত্বশীল হওয়ার প্রথম ধাপ।’ এবার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এসব সাজাপ্রাপ্ত সেনাদের কারামুক্তির বিষয়ে সুচির মুখপাত্র জ হতাইর সঙ্গে রয়টার্স যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোন ধরেনি।

এদিকে, বৃহস্পতিবার ওই সাত সেনার মধ্যে জিনপিং নামে একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে সমর্থ হয় রয়টার্স। নিজেকে সাজাপ্রাপ্ত সাত সেনার একজন বলে স্বীকার করে জিনপিং জানায় এখন সে মুক্ত। এর বেশি কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে জিনপিং বলেন, “এ বিষয়ে আমাদের মুখ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।


শর্টলিংকঃ