Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

লাইসেন্স নেই ‘দুর্নীতিমুক্ত’লেখা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের


 নিজস্ব প্রতিবেদক:

লাইসেন্স না থাকায় রাজশাহী নগরীর এইড প্লাস ডায়াগনস্টিক এন্ড এজমা সেন্টার লিমিটেড এবং সা’দ ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় তাদের জরিমানাও করা হয়।

রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার এইড প্লাস ডায়াগনস্টিক এন্ড এজমা সেন্টার লিমিটেড। প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই হাতের বামে চোখে পড়বে লাল ফ্রেমে বড় করে বাঁধাই করা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. ফেরদৌস আহমেদ আল আরিফের ছবি। ছবি নিচেই বড় বড় হরফে লেখা ‘আমাদের প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিমুক্ত’। কিন্তু ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে ধরা পড়লো প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্সই নেই।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এইড প্লাস ডায়াগনস্টিক  সেন্টারে হানা দেয় জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত।  আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রনী খাতুন ও নাজিয়া হোসেন এবং ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আলম ইফতেখার বেলায়েত দেখতে পান নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি। সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে কোনো ধরনের অনুমতি বা লাইসেন্স ছাড়াই চলছে এইড প্লাসের কার্যক্রম।

ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপনের কোনো নিয়ম কানুনই মানা হয় নি। নেই পর্যাপ্ত ও প্রশিক্ষিত জনবল। ফ্রিজে খাবারের সাথেই রাখা হয়েছে ওষুধ রিএজেন্ট (অন্য পদার্থের অস্তিত্ব জানার জন্য ব্যবহৃত বস্তু)। তবে বেশির রিএজেন্টের মোড়কেই লেখা নেই মেয়াদ।  সেখানে অভিযানের সময় পাওয়া যায় নি কোনো চিকিৎসকও। ছিলেন না ম্যানেজারও।

পরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্দেশে হাজির হন এইড প্লাসের ম্যানেজার সিরাজুর রহমান। ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির লাইসেন্স না থাকা ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ৩৫হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এসময় ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি বন্ধের নির্দেশ দেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রনী খাতুন।

পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সামনে অবস্থিত সাদ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। এই ডায়াগনস্টিক সেন্টারেরও কোনো লাইসেন্স নেই। নেই ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মতো উপযোগী পরিবেশ।  সেখানে আদালত দেখতে পান চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।

সেখানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আসা এক নারী রোগীর দেখা মেলে।  রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরের ব্যবস্থা্পত্রে নাম-ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্যের সকল কলাম ফাঁকা থাকলেও পেছনের পৃষ্ঠায় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার পরামর্শ রয়েছে। কিন্তু তাতে সীল মারা থাকলেও ছিল না চিকিৎসকের নাম বা স্বাক্ষর।

পরে ভ্রাম্যমান আদালত সাদ ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৩০হাজার টাকা জরিমানা করেন। লাইসেন্স না পাওয়া পর্যন্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারটির কার্যক্রম বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেয়া হয়।

অভিযান শেষে  নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রনী খাতুন ইউনিভার্সাল২৪নিউজকে জানান, লাইসেন্স না নিয়েই দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।  আইনের পরিপন্থী কাজ করায় তাদের জরিমানা ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে, রাজশাহীর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সূত্র জানাচ্ছে, নগরীতে ১৬০টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনার জন্য লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছে। এরমধ্যে ৩২টি পরিদর্শন করেছে সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিনিধি দল।


Exit mobile version