শিক্ষা খাতের ফ্রিল্যন্সারেরা বাঁচবে কিভাবে ?


কোভিড -১৯ এ আক্রান্ত পুরো পৃথিবী। ইতিমধ্যে পৃথিবী থেকে প্রায় ৩ লাখের মত মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। আমাদের বাংলাদেশেও প্রতিদিন শত শত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। কোভিড -১৯ এর থাবা শুধু মানুষের জীবনের উপরই পড়ে নি বরং এর প্রভাব শিল্প,ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি, শিক্ষা ইত্যাদির উপরও পড়েছে ৷ বেকার হয়েছে অসংখ্য মানুষ। ক্ষুদার্থ মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে ।

এই সময়ে এসে দেশের অনেক ছোট ছোট ব্যবসা বাণিজ্য ধীরে ধীরে সরকার চালু করার চেষ্টা করছে । কারন অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে হলে কিছু কিছু সেক্টর অবশ্যই শিথিল করতে হবে হয়তো। দেশের ডাক্তার, পুলিশ সেনাবাহিনী সহ সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দিন রাত পরিশ্রম করে এই মহামারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। কিন্তু দেশের শিক্ষা খাত একেবারেই বন্ধ হয়ে আছে।

স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় সব বন্ধ। কবে থেকে এগুলো খুলবে তারও কোন ঠিক নেই। এমত অবস্থায় দেশের শিক্ষা খাতের একটা বড় অংশ জুড়ে থাকা, স্কুল কলেজের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করা কোচিং সেন্টার ও প্রাইভেট সেন্টার গুলো বন্ধ। লক্ষ লক্ষ মানুষ এই পেশায় জড়িত। কোচিং সেন্টারের সাথে জড়িত থাকা এই লক্ষ লক্ষ মানুষের বেশিরভাগই কিন্তু মানবেতর জীবন যাপন করছে। কারন কোচিং বন্ধ থাকলে এই মানুষগুলোর আয় রোজগার একদমই বন্ধ হয়ে যায়।

স্কুল কলেজের শিক্ষকরা মাসিক বেতন পেলেও যারা ফ্রি -ল্যান্সার হিসেবে কোচিং বা প্রাইভেট সেন্টারে পাঠদান করে তাদের অবস্থা কিন্তু দিন দিন খারাপ হচ্ছে। বড় বড় ব্যবসায়ীরা প্রণোদোনা পাচ্ছে, গার্মেন্টস শিল্প প্রণোদনা পাচ্ছে। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন রকম সাহায্য সহযোগিতা পেলেও ফ্রি-ল্যান্সার শিক্ষকরা কিছুই পাচ্ছে না।

সরকারের কোন তালিকাতেই এই সব শিক্ষকদের নাম নেই। এর পর মরার উপর খাড়ার ঘায়ের মত আবার যুক্ত হয়েছে বাড়ি ভাড়া। কারন প্রতিটা কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেট সেন্টার গড়ে উঠেছে ভাড়া করা বিল্ডিং এ। মাসের উপর মাস এই সব কোচিং বা প্রাইভেট সেন্টার বন্ধ থাকায়, স্টাফদের বেতন আর বাড়ি ভাড়া দিতে হিম শিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট কোচিং বা প্রাইভেট সেন্টারের মালিকরা।

আমরা আশা করবো এত লক্ষ লক্ষ মুখ গুলোর দিকে তাকিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে এবং বাড়ি ভাড়ার কিছু অংশ মওকুফের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা আরো ও আশা করি যে, সব অন্ধকার দূর হয়ে খুব দ্রুত আলোর মুখ দেখা যাবে। আবার হাসি ঠাট্টা, আড্ডায়, উৎসবে মেতে উঠবে পৃথিবীর মানুষ।

লেখক: চঞ্চল কুমার, পরিচালকঃ Chanchal Physics Clinic , বাটার মোড়, রাজশাহী


শর্টলিংকঃ