Site icon ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ

শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়ন হচ্ছে না: ভারত


ইউএনভি ডেস্ক:

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফর বাতিলের পর দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত উত্তর-পূর্ব ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাভিশ কুমার বৃহস্পতিবার আরও বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে বাংলাদেশ ধর্মীয় নিপীড়ন হচ্ছে বলে দাবি করেনি ভারত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আউটলুক এক প্রতিবেদনে এখবর জানিয়েছে।

৯ ডিসেম্বর মধ্যরাতে ৩১১-৮০ ভোটে লোকসভার অনুমোদন পায় ‘দ্য সিটিজেনশিপ (অ্যামেন্টমেন্ট) বিল, ২০১৯’ শীর্ষক বিতর্কিত বিল।অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে লোকসভায় এটি উত্থাপন করে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে বিলটিকে ‘মুসলিমবিরোধী’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বুধবার এটি রাজ্যসভায় উত্থাপন করা হয়। বিজেপি সরকার বলছে, এই বিল পাসের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় কারণে নিপীড়িত মানুষের আশ্রয়স্থল হবে ভারত।

তবে সমালোচকদের মতে, বিজেপি’র মুসলমান জনগোষ্ঠীকে কোণঠাসা করার নীতির অংশই এই বিলটি। ‘মুসলিমবিদ্বেষী’ বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে আসাম। গত কদিন ধরেই রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বুধবারও অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে সেখানকার পরিস্থিতি। বিক্ষোভের মধ্যেই ওই দিন রাজ্যসভাতেও পাস হয়েছে বিতর্কিত বিলটি। লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও বিলটি পাস হলে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে আন্দোলনকারীরা। এর জেরেই শেষ পর্যন্ত আন্দোলন দমনে সেনা মোতায়েনে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন নির্ধারিত ভারত সফর বাতিল করার ঘোষণা দেন। ১২ থেকে ১৪ ডিসেম্বর ভারত মহাসাগর সংলাপে উপস্থিত ও ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে তার বৈঠক করার কথা ছিল।

বাংলাদেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর বাতিলের পর রাভীশ কুমার বলেছেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক দৃঢ় এবং এই সফর বাতিলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতে চলমান নাগরিকত্ব সংশোধন বিলের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের কোনও সম্পর্ক নাই।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকারের শাসনামলে কোনও ধর্মীয় নিপীড়ন হচ্ছে না।

এর আগে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশে ধর্মীয় নিপীড়নের যে অভিযোগ করেছিলেন তা অসত্য। তিনি আরও বলেছিলেন, যে-ই ভারত সরকারকে এই তথ্য দিয়েছে, তা ভুল।

এই বিষয়ে রাভীশ কুমার বলেন, মনে হচ্ছে বোঝাপড়ায় কোনও ঘাটতি তৈরি হয়েছে। আমরা আগেই ব্যাখ্যা করে বলেছি যে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের অধীনে কোনও ধর্মীয় নিপীড়ন হচ্ছে না। বাংলাদেশ থেকে যেসব অভিবাসী শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় চেয়েছেন তারা ধর্মীয় কারণে নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সামরিক এবং বাংলাদেশের পূর্ববর্তী সরকারের আমলে।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র আরও বলেন, আমার আরও স্বীকার করেছি এবং সচেতন যে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার সংবিধান অনুসারে দেশটিতে বসবাসরত সংখ্যালঘুদের উদ্বেগ নিরসনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।

অমিত শাহ বলেছিলেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে বাংলাদেশে কোনও ধর্মীয় নিপীড়ন হয়নি। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারকে আক্রমণ করেছিলেন। বিএনপি শাসনামলে হিন্দু নারীদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং হিন্দুদের বাড়ি ও মন্দির ভাঙার ঘটনা তুলে ধরে তিনি এই সমালোচনা করেন।


Exit mobile version