শেয়ারবাজারে ১৩ বছরের সর্বনিম্ন লেনদেন


ইউএনভি ডেস্ক:

শেয়ারবাজারে আগ্রহ নেই বিনিয়োগকারীদের। প্রতিদিনই কমছে লেনদেন। রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মাত্র ৩৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। ডিএসইর এ লেনদেন গত ১৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০০৭ সালের ২৩ এপ্রিল ৩৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।


একই অবস্থা দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। তবে লেনদেন কমলেও বাজারে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে সূচক ধরে রাখা হয়েছে। শেয়ারবাজারের পরিভাষায় একে ফ্লোর প্রাইস বলে। বিশ্লেষক বলছেন, ফ্লোর প্রাইস তুলে না দেয়ায় বাজার স্বাভাবিক হচ্ছে না।

জানা গেছে- করোনার কারণে টানা ৬৬দিন বন্ধ থাকার পর গত ৩১মে দেশের শেয়ারবাজারে আবার লেনদেন চালু হয়। দীর্ঘ বন্ধের পর এখন পর্যন্ত শেয়ারবাজারে ১৬ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইতে একশ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে মাত্র ৫ কার্যদিবস। বাকি ১১ কার্যদিবস একশ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়েছে।

লেনদেন খরার বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, ফ্লোর প্রাইসের (শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম) কারণে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে না। কোম্পানিগুলোর শেয়ারের যে দাম বেঁধে দেয়া হয়েছে, ওই দামে বিনিয়োগকারীরা কিনতে আগ্রহী নয়।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারের লেনদেন খরা কাটানোর জন্য ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া উচিত। এতে হয়তো প্রথমদিকে দরপতন হবে। তবে কিছুদিন পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে কিছু টাকা তুলতে পারবেন। সেই টাকা দিয়ে নতুন শেয়ার কিনতে পারবেন। এতে বাজারে গভীরতা বাড়বে।

এতদিন ফ্লোর প্রাইসের পক্ষে থাকলেও এখন ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়ার পক্ষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান। এ বিষয়ে তিনি  বলেন, একটি বিশেষ সময়ের প্রেক্ষিতে ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। আমি মনে করি এখন ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়ার সময় এসেছে। তিনি বলেন, ফ্লোর প্রাইসের কারণে অনেক বিনিয়োগকারীর টাকা আটকে রয়েছে। তারা শেয়ার বিক্রি করতে চাইলেও বিক্রি করতে পারছেন না। ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নিলে তারা বিক্রি করার সুযোগ পাবেন এবং দাম কমলে নতুন করে কিনে সমন্বয় করতে পারবেন। সুতরাং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এখন ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়া উচিত।

লেনদেন খরার বাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে কমেছে, তার থেকে কম। ফলে সূচকের কিছুটা উত্থান হয়েছে। লেনদেন শেষে ডিএসইর ব্রড সূচক আগের দিনের চেয়ে ২ পয়েন্ট বেড়ে ৩ হাজার ৯৬২ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ৯১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেয়া মাত্র ১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪টির। আর ২১৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। টাকার অঙ্কে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লিন্ডসে বিডি শেয়ার। কোম্পানিটির ২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মার ২ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে এর পরের স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রেকিট বেনকেইজার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস, ফিনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, বেক্সিমকো লিমিটেড, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট এবং ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৩ পয়েন্ট। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ৯১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৮টির, কমেছে ৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭৪টির। সূত্র – যুগান্তর


শর্টলিংকঃ