সংকটে কাহিল গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল


সুমন মিয়া, গাইবান্ধা :

প্রায় দুই বছর ধরে চক্ষু এবং নাক, কান গলার কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে।  আর প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নেই  চর্ম, যৌন ও এলার্জি রোগের কোন চিকিৎসককে। এসব রোগের চিকিৎসক এই হাসপাতালে না পাওয়ায় প্রতিবছর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ।

গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল

জেলা হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে ২০০ শয্যায় উন্নীত হলেও জনবল অনুমোদন না হওয়ায় ১০০ শয্যার জনবল নিয়েই দৈনন্দিন কার্যক্রম চলছে বছরের পর বছর ধরে। আবার সেই ১০০ শয্যার মধ্যেই নেই বিভিন্ন রোগের সিনিয়র কনসালটেন্ট সাতজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট পাঁচজন, একজন করে মেডিকেল অফিসার ও ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার এবং আটজন সহকারী সার্জনসহ বিভিন্ন পদের জনবল।

গত ২৬ জানুয়ারি ফুলছড়ি উপজেলার একটি চর থেকে চোখে আঘাত পাওয়া ৮ থেকে ১০ বছর বয়সের এক শিশুকে নিয়ে এসেছিলেন দুই ব্যক্তি। তারা রাত আটটার দিকে বিভিন্নস্থান ঘুরে গাইবান্ধা পৌর এলাকার দক্ষিণ ধানঘড়ার মরিয়ম চক্ষু হাসপাতালে যান। সেসময় এটি বন্ধ থাকায় তাদেরকে ফায়ার সার্ভিসের সামনে এক চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়। এসময় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

জেলা হাসপাতালে চক্ষু সমস্যার কোন চিকিৎসক না থাকায় তারা এভাবেই সেদিন ভোগান্তির শিকার হন। পৌর এলাকার জুম্মাপাড়ার আলমগীর হোসেন বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি চর্ম রোগের সমস্যার কারণে  রোগী নিয়ে গিয়েছিলাম জেলা হাসপাতালে। গিয়ে শুনি এ রোগের চিকিৎসক নেই। পরে কোন চিকিৎসককে না দেখিয়েই ফেরত আসতে হয়েছে।

জেলা হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, বিশেষজ্ঞ এসব চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এতে করে আর্থিকভাবে লোকসান ও নানান সমস্যায় পড়তে হয় রোগী ও তাদের স্বজনদের। অথচ এসব রোগের চিকিৎসক যদি জেলা হাসপাতালেই থাকতেন তাহলে রোগী ও তাদের স্বজনরা ভোগান্তির শিকার হতো না।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানী ডোনার ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নয়ন চন্দ্র রায় বলেন, চোখ ও নাক, কান গলা এবং চর্ম, যৌন ও এলার্জি রোগের কোন চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা চিকিৎসককে না পেয়ে ফেরত যান। পরে বেশি টাকা ব্যয় করে রোগীদেরকে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে যেতে হয়। অনেকেই হয়ত আবার চিকিৎসকের কাছে যায় না।

এ বিষয়ে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. আ খ ম আসাদুজ্জামান বলেন, এসব শুন্য পদের তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।


শর্টলিংকঃ