সংস্কারের বছর না ঘুরতেই অচল পুঠিয়া-তাহেরপুর সড়ক


আবু হাসাদ, পুঠিয়া :

একদিনের সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটুপানি জমেছে রাজশাহীর পুঠিয়া-তাহেরপুর সড়কে। সংস্কারের বছর না ঘুরতেই আবারো খানাখন্দে ভরে গেছে ২৭কিলোমিটার এই সড়কটি। এতে  দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ বলছে, সংস্কারে আবারো অর্থ বরাদ্দ হলেও বর্ষা মওসুমের কারণে আপাতত কাজে হাত দেয়া যাচ্ছে না। 

খানাখন্দ আর বৃষ্টিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে সড়কটি

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পুঠিয়া-বাগমারা ২৭ কিলোমিটার সড়কটি ১৯৮৫ সালে কার্পেটিং করা হয়। এর কয়েক বছর পর সড়কের বেশীর ভাগ স্থান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সড়কটি ২০০৪ সালে পুঠিয়া হতে তাহেরপুর পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সংস্কার কাজ করা হয়। এরপর ২০০৭-০৮ অর্থবছরে বন্যা পুনর্বাসন তহবিলের ৩০ লাখ টাকায় রাস্তাটির ১৩ কিলোমিটার সংস্কার কাজ করা হয়।

সর্বশেষ গত পাঁচ বছর আগে ৫ কোটি ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে পুঠিয়া সদর থেকে তাহেরপুরহাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার সড়কটি সংস্কার করা হয়। তবে উচ্চতা অনেক কম হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে সড়কটির কয়েকটি স্থানে পানি যাতায়াত করে। যার কারণে সড়কটি পুণঃসংস্কার করা হলেও টেকসই হয় না।
পুঠিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিএম হিরা বাচ্চু বলেন, জনবহুল এই সড়কটি দীর্ঘদিন থেকে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। পুঠিয়া দুর্গাপুর ও বাগমারা আসনের বতর্মান সাংসদদের প্রচেষ্টায় চলতি বছরের শুরুতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেকে ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন দিয়েছেন। রাস্তাটি ২৪ ফুট চওড়া ও ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। দেশে করোনাভাইরাসের কারণে নির্মাণ কাজ শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।

তবে পথচারীরা অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে পুরো সড়কজুড়ে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় মাঝে মধ্যে বিভিন্ন স্থানে যানবাহনগুলো আটকে যাচ্ছে। আবার অনেক সময় গাড়ির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভেঙে রাস্তাতেই পড়ে থাকছে। তারা আরো বলেন, সড়কটি ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার। যার কারণে সংস্কার করার কিছু দিনের মধ্যে সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় গর্ত ও ভাঙ্গন শুরু হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্টরা মাঝে মধ্যে সড়কের কয়েকটি স্থানে ইট-বালু দিয়ে বড় গর্তগুলো বন্ধ করে। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যে তা পুরনো রুপে ফিরে আসে। এতে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

পুঠিয়ার শিলমাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলেন, এই সড়কে দুর্গাপুর, পুঠিয়া, বাগমারা, নাটোরের নলডাঙ্গা ও নওগাঁ জেলার কয়েক লাখ মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। সড়কটি সংস্কারে অনিয়মের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরে কয়েকবার লিখিত ও মৌখিক ভাবে অভিযোগ দিয়েছি। সড়ক ও জনপথের লোকজন মাঝে মধ্যে ভাঙাচোরা দু’এক স্থানে এসে নামমাত্র কিছু ইট-বালু ফেলে চলে যায়।

এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সানজিদা আফরীন ঝিনুক বলেন, একনেকে অনুমোদিত ১৩০ কোটি টাকা নতুন বরাদ্ধে রাস্তাটি ২৪ ফুট চওড়া করা হবে। গত দু’দিন আগে এই সড়কের জিও পাস হয়েছে। সড়কটি পুঠিয়া সদর থেকে বাগমারা উপজেলা পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য হবে। আশা করা যাচ্ছে অল্প দিনের মধ্যে টেন্ডার আহবান করা হবে। তবে এই বর্ষা মৌসুমে কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। আর সড়কটি জরাজীর্ন স্থান গুলো পর্যায় ক্রমে আমরা ইট-বালি দিয়ে যানবাহন চলাচলের উপযোগী রাখছি।


শর্টলিংকঃ