সমাজসেবার গণমিলনায়তনগুলো এখন পরিত্যক্ত!


আবু হাসাদ কামাল, পুঠিয়া :
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের গণমিলনায়তন কেন্দ্রগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে গত দেড় যুগ ধরে।  তদারকি না থাকায় এগুলো এখন মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা দখলে নিয়েছে। দিন দিন লুট হয়ে যাচ্ছে গণমিলনায়তনের বিভিন্ন আসবাব। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টাকা বরাদ্দ না থাকায় ভবনগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া যাচ্ছে না।

উপজেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮০ সালের দিকে ইউনিয়ন সমাজ সেবা গণমিলনয়াতন কেন্দ্র গুলো স্থাপন করা হয়ে ছিল। সে সময় সারাদেশের মোট ১৯টি জেলার মডেল উপজেলা গুলোতে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয় এই গণমিলনায়তনের। যা তৃর্ণমূল পর্যায়ে সাধারন মানুষদের কারিগরি শিক্ষা, স্বল্প ও সহজ সুবিধায় ঋণ প্রদানের পাশাপাশি সমাজ পরিবর্তনের সহায়ক ভূমিকা রাখতো।

সে সময় পুঠিয়া উপজেলায় মোট ৬টি গণমিলনায়তন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এগুলো হচ্ছে শিলমাড়িয়া, জিউপাড়া, ভালুকগাছি, বানেশ্বর, বেলপুকুর ও সদর ইউনিয়ন এলাকায়। আর গণমিলনয়াতন গুলো তদারকির করার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে একজন করে ইউনিয়ন সমাজকর্মী নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিভিন্ন অবকাঠামো সংকট ও রক্ষনা-বেক্ষনের অভাব দেখিয়ে ১৯৯২ সালের দিকে ইউনিয়ন এলাকা থেকে গণমিলনায়তনের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে উপজেলা সদরে আনা হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে তদারকির অভাবে ইউনিয়ন সমাজ সেবা গণমিলনায়তন কেন্দ্র গুলো ঝোঁপঝাড়ের পরিণত হয়ে আছে। বেশীর ভাগ কেন্দ্রের দরজা-জানালা নেই। বিভিন্ন আসবাপত্র ও সরঞ্জামাদি অযত্নে অবহেলায় যত্রতত্র ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে ভেতরে ও বাহিরে বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবীদের আনাগোনাও দেখা গেছে। স্থানীয় লোকজন গণমিলনায়তন ভবন গরু-ছাগলের খাবার ও খড়ি রাখার ঘর হিসাবে ব্যবহার করছেন।

জিউপাড়া এলাকার আশরাফ আলী বলেন, আগে ইউনিয়ন সমাজ সেবা গণমিলনয়াতন কেন্দ্র গুলোতে এলাকার বেকার ছেলে-মেয়েরা বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষার প্রশিক্ষন নিত। গ্রামের অস্বচ্ছল ব্যক্তিদের সহজ শর্তে ঋন আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিল। এই সামাজ সেবার কার্যক্রম গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেন্দ্র গুলোতে স্থানীয় বখাটেরা আসামাজিক কাজ শুরু করেছে। অনেকই খড়-কুটো রাখার ঘর হিসাবে ব্যবহার করছে।

পুঠিয়া উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান বলেন, ইউপি ৬টি গণমিলনায়তন কেন্দ্রের মধ্যে এখনো দু’একটি ব্যবহার উপযোগী। আমাদের ফান্ড না থাকায় ভবনগুলো  রক্ষণাবেক্ষন করা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উর্দতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

এ ব্যাপারে রাজশাহী চেয়ারম্যান জিএম হীরা বাচ্চু বলেন, তৃর্ণমূল পর্যায়ে সাধারণ মানুষের জন্য ইউপি গণমিলনায়তন কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা হয়েছে। অচিরেই এ ভবনগুলো সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।


শর্টলিংকঃ