সরকারবিরোধী বিক্ষোভে থাইল্যান্ডে জড়ো হচ্ছে হাজারো মানুষ


ইউএনভি ডেস্ক:

সরকারবিরোধী বিক্ষোভে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে জড়ো হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। শনিবার তারা বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার পদত্যাগ দাবি করে। খবর রয়টার্স ও বিবিসি।

২০১৪ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন প্রায়ুথ চান-ওচা। পরবর্তী সময়ে বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। এমনকি নিজেকে এবং দলকে জয়ী করার জন্য দেশটির সংবিধানে বিতর্কিত সংশোধনীও আনেন ওচা। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই থাইল্যান্ডের শক্তিশালী রাজতন্ত্রের পুনর্গঠনও দাবি করছেন।

গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকেই থাই সরকারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। নতুন সংবিধান এবং নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে মূলত ছাত্র নেতৃত্বাধীন আন্দোলনকারীরা।

থাইল্যান্ডে সাধারণত রাজপরিবারের সমালোচনা করা নিষিদ্ধ। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে থাইল্যান্ডের রাজা মাহা ভাজিরালংকর্নের সমালোচনা করে দীর্ঘদিনের এ প্রথা ভাঙল বিক্ষোভকারীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, থামাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কমপক্ষে পাঁচ হাজার বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছে। গ্র্যান্ড প্যালেসের বিপরীত পাশে অবস্থিত সানাম লঞ্জে জড়ো হয় বিক্ষোভকারীরা। ওই এলাকা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত এবং সেখানে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

থাইল্যান্ডের মানবাধিকার আইনজীবী আর্নন নামপা এক টুইট বার্তায় বলেন, আজ লোকজন তাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নেমেছে। তিনি এ বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

২০০৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। তিনি জনগণের কাছে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন।

বিক্ষোভে অংশ নেয়া ৬৮ বছর বয়সী তাসাওয়ান সুয়েবথাই বলেন, আমি আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করতে এখানে এসেছি। আমি আশা করছি, আমি যখন থাকব না তখন তারা স্বাধীন হয়ে যাবে।

সরকারের পতন চেয়ে বিক্ষোভ হলেও তা ছিল বেশ শান্তিপূর্ণ। গত মাসের একটি বিক্ষোভে ১০ হাজারের বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিল। এবার তার চেয়েও আরো বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেবে বলে আশা প্রকাশ করে বিক্ষোভের আয়োজন করে সংগঠনগুলো।

পানুপং নামে বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেয়া এক নেতা বলেন, আমরা রাজতন্ত্রকে সঠিক স্থানে বসাতে লড়াই করে যাচ্ছি, আমরা এর বিলুপ্তি চাই না। এদিকে ওয়ান নামে ২০ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী বলেন, রাজতন্ত্র পুনর্গঠনের এটাই সময়।

আধুনিক থাইল্যান্ডের ১৯টি সংবিধানেই রাজাকে শীর্ষস্থান প্রদান করে বলা হয়, রাজাকে অবশ্যই পূজনীয় জায়গায় রাখতে হবে। কোনো ব্যক্তিই রাজার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা পদক্ষেপ নিতে পারবে না।

এটাকে সমর্থন দিয়েছে সংবিধানটির ১১২ অনুচ্ছেদ যেখানে বলা হয়, রাজপরিবারের সমালোচনাকারী ব্যক্তি গোপন বিচারের সম্মুখীন হবেন এবং তাকে দীর্ঘমেয়াদি সাজা দেয়া হবে।

২০১৪ সালের সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে এ আইনটি হরহামেশাই ব্যবহূত হয়ে আসছে। ২০১৫ সালে এক ব্যক্তি থাই রাজার প্রিয় কুকুরের ছবি শেয়ার করে বিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করায় তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।

বিক্ষোভকারীরা এজন্য রাজতন্ত্রের সংশোধন ও প্রধানমন্ত্রী ওচার পদত্যাগের দাবিতে জোরালো অবস্থান নিচ্ছে। এ মহামারী পরিস্থিতিতে এভাবে বিক্ষোভ করায় করোনার বিস্তার বেড়ে যেতে পারে বলে বিক্ষোভকারীদের সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ।


শর্টলিংকঃ