- ইউনিভার্সাল ২৪ নিউজ - https://universal24news.com -

সাংবাদিক কাজলের এক মামলায় জামিন, অন্য মামলায় কারাগারে


ইউএনভি ডেস্ক: 

নিখোঁজ ফটোসাংবাদিক ও পক্ষকাল পত্রিকার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজলকে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলায় জামিন দিলেও ৫৪ ধারার নতুন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

যশোরের আমলী আদালতের (শার্শা) বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম রোববার শফিকুল ইসলাম কাজলকে বিজিবির করা অবৈধ অনুপ্রবেশ মামলায় জামিন দেন। তবে যশোর কোতোয়ালি থানার ৫৪ ধারায় করা অপর একটি মামলায় তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

বিজিবির দাবি, শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে ভারত থেকে হেঁটে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় তাকে আটক করা হয়। পাসপোর্ট আইনের মামলা ও ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার বিকালে তাকে যশোরের আদালতে সোপর্দ করা হয়।

এর আগে তাকে বেনাপোল পোর্ট থানার পুলিশ হ্যান্ডকাপ পরিয়ে বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে যশোরে নিয়ে আসে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি মামুন খান বলেন, আসামি কাজলের হাতে হ্যান্ডকাপ পরানোয় আইনের ব্যত্যয় ঘটেনি। আইনি প্রক্রিয়ায় তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

দৈনিক পক্ষকাল পত্রিকার সম্পাদক ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল মেহেরপুর সদর উপজেলার কাশারীপুর গ্রামে মনোয়ার হোসেনের ছেলে। তার বর্তমান ঠিকানা ঢাকার ১৩/২ বকশীবাজার। তার বিরুদ্ধে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করা হয়েছে। গত ১০ মার্চ তিনি ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন। পরিবারের দাবি, তাকে অপহরণ করা হয়েছে।

এ মামলার বাদী ৪৯ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বেনাপোলের রঘুনাথপুর বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার মো. আশেক আলী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, অবৈধভাবে বিনা পাসপোর্টে ভারতীয় দালালের মাধ্যমে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছিল বলে স্বীকার করেন শফিকুল ইসলাম কাজল। তার বিরুদ্ধে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মামলা দিয়ে তাকে গভীর রাতে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করে বিজিবি।

রোববার দুপুরে বেনাপোল থেকে এনে তাকে যশোর ডিএসবি কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের মামলা ছাড়াও ঢাকায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

ডিএসবি কার্যালয় থেকে আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয় শফিকুল ইসলাম কাজলকে। এ সময় তিনি মানসিকভাবে দৃঢ় ছিলেন। আদালত প্রাঙ্গণে তার ছেলে মনোরম পলক তাকে জড়িয়ে ধরেন। এ সময় তার ছেলেকে বলেন, ‘ভয় পাসনে, আমি কোনো অন্যায় করিনি। সত্যের জয় হবেই।’

আদালত সূত্র জানায়, যশোরের আমলী আদালতের (শার্শা) বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে বিজিবির দায়ের করা অবৈধ অনুপ্রবেশ মামলায় জামিন দেন। তবে যশোর কোতোয়ালি থানার ৫৪ ধারায় দায়ের করা অপর একটি মামলায় তাকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

কারাগারে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে জানিয়েছেন কাজলের আইনজীবী সুদীপ্ত ঘোষ।

কাজলের ছেলে মনোরম পলক বলেন, বাবাকে ফিরে পেয়েছি এতে অনেক খুশি। বাবার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে পিতার দ্রুত জামিনের দাবিও করেছেন তিনি।

জানা গেছে, যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার ওয়েস্টিন হোটেলকেন্দ্রিক কারবারে জড়িতদের নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কারণে মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে তাতে আসামির তালিকায় শফিকুল ইসলাম কাজলের নামও রয়েছে। মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর গত ৯ মার্চ শেরেবাংলানগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ওই মামলাটি করেন।

সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় দৈনিক পক্ষকাল অফিস থেকে বের হন। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। ফলে পরদিন ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসী নয়ন। পরে ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক।