সিলেটে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ছাত্রাবাসে তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ


ইউএনভি ডেস্ক:

সিলেটের মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে এক দম্পতিকে আটকে রাখার পর স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ওই দম্পতির করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, কলেজের ক্যাম্পাসে বেড়াতে যাওয়ার পর ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাদের তুলে আনেন ছাত্রাবাসে। পরে স্বামীকে একটি কক্ষে আটকে রেখে রাস্তায় স্ত্রীকে গণধর্ষণ করে।

খবর পেয়ে পুলিশ শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই দম্পতিকে ছাত্রাবাসের একটি ব্লকের সামনে থেকে উদ্ধার করেছে। পরে ধর্ষণের শিকার নারীকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের নাম-পরিচয় এখনও সনাক্ত হয়নি।

জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে ওই দম্পতি এমসি কলেজ এলাকায় বেড়াতে গেলে ৪/৫ জন তরুণ তাদের জোর করে ছাত্রাবাসের ভেতরে নিয়ে যায়। পরে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে স্বামীকে আটকে রেখে ভেতরের সড়কে ফেলে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে তারা। ওই দম্পতির বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায়।

পুলিশ জানায়, দক্ষিণ সুরমা এলাকার এক দম্পতিকে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে আটকে রাখা হয়েছে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। উদ্ধার হওয়া নারী ধর্ষণের অভিযোগ করায় তাকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়।’

এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের সুপার জামাল উদ্দিন জানান, ‘কয়েকজন যুবক ছাত্রাবাসে এক দম্পত্তিকে আটক রাখে বলে অভিযোগ পেয়েছি। পরে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে।’ এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিস) জোর্তিময় সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ‘এমসি কলেজের হোস্টেলের একটি ব্লকের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় কারা জড়িত তা এখনও জানা যায়নি তবে আমাদের তদন্ত চলছে।’

এদিকে রাতেই র‌্যাব-০৯ এর এএসপি সামিউল আলম, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহা. সোহেল রেজা পিপিএমসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

অন্যদিকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্ত এসব কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক রনজিত সরকারের অনুসারী। আর তারা সকলেই ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী। করোনা পরিস্থিতির কারণে কলেজ-ছাত্রাবাস বন্ধ থাকলেও তারা ছাত্রাবাসেই অবস্থান করছিল। আর তাদের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা ধরণের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগও রয়েছে।

সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হোসাইন আহমদ এমসি ক্লাব নামে ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন, ‘আসামির চেহারার বর্ণনাসহ ধর্ষিতার স্বামীর দেওয়া স্টেটমেন্ট শুনে সবার আগে আমিই এম সাইফুর রহমান, শাহ রনি, তারেকের নাম ছবি তাদের রুমের টেবিল থেকে তাদের আইডি কার্ড সিভি পুলিশের হাতে জমা দিয়েছি।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘সুবিধাবাদী ছাত্রলীগকর্মী এম সাইফুর রহমান, শাহ রনি, তারেক কর্তৃক কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘটিত ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদে এরা ছাড়াও আরো যারা জড়িত সকলকে দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তাদের কঠোর শাস্তির দাবিতে ছাত্রলীগ সিলেট এমসি কলেজ শাখাসহ কলেজের সকল সামাজিক সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে শনিবার দুপুর ১২টায় কলেজ ক্যাম্পাস প্রাঙ্গনে বিক্ষোভ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।’


শর্টলিংকঃ